বৃহস্পতিবার, ২১ মে, ২০২০

Online courses for immunisation service providers


Online courses for immunisation service providers


Funded By: Australian Government

সঠিক সময়ে সঠিক টিকা দেয়ার মাধ্যমে বাচ্চাদের অনেক ঘাতক ব্যাধি থেকে রক্ষা করা সম্ভব। অনেক সময় বাবা মার সীমিত জ্ঞান বিষয়টিকে আরও বেশি জটিল করে তোলে। সকল বাবা মার উচিত বাচ্চাদের টিকার ব্যাপারে খুব ভালোভাবে জেনে রাখা যাতে করে সঠিক সময়ে সঠিক টিকা দেয়া সম্ভব হয়। এ ব্যাপারে প্রয়োজনে শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া বাঞ্ছনীয়।

টিকা কি?

টিকা এক ধরণের প্রতিষেধক যা একটি শিশু জন্মের পর থেকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে দেয়া হয়ে থাকে। কিছু কিছু টিকা বাচ্চার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে যা অনেক বাবা-মায়েরই অনেক সময় অজানা থাকে।
বাচ্চাদের জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় টিকা

(১) হেপাটাইটিস-বি টিকা (হেপ বি):
সকল নবজাতকের হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ হওয়ার আগে হেপাটাইটিস-বি ভ্যাকসিন (হেপ বি) নেয়া উচিত। হেপ বি টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে নিচের চার্ট লক্ষ্য করুনঃ
হেপাটাইটিস-বি টিকা - জন্মের পর-৬ সপ্তাহ
হেপাটাইটিস-বি টিকা - ৬ সপ্তাহ/২ মাস
হেপাটাইটিস-বি টিকা - ১০ সপ্তাহ / ৪ মাস
হেপাটাইটিস-বি টিকা - ১৪ সপ্তাহ / ৪ মাস
হেপাটাইটিস-বি টিকা (১ম বুস্টার ডোজ ) - ১৫-১৮   মাস
হেপাটাইটিস-বি টিকা - ৪-৬ বছর
এছাড়া হেপ এ ওয়ান এবং হেপ এ টু টিকা গুলো ১২ মাস পরই দিয়ে দিতে হবে।

(২) পোলিও টিকা
পোলিও একটি মারাত্মক ব্যাধি। এই ব্যাধি থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় শিশুকে সঠিক সময়ে টিকা দেয়া। দুইভাবে পোলিও টিকা দেয়া যেতে পারে। যথা- ও. পি. ভি. এবং আই. পি. ভি. । ও. পি. ভি. হল ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন যা মুখে খাওয়ানো হয়ে থাকে এবং আই. পি. ভি. হল ইনএক্টিভেটেড পোলিও ভ্যাকসিন যা ইনজেকসান এর মাধ্যমে দেওয়া হয়। নিচের পোলিও টিকার চার্ট লক্ষ্য করুনঃ
পি. ভি.  -   জন্মের পর থেকে ৬ সপ্তাহ
পি. ভি./আই. পি. ভি. - ৬   সপ্তাহ/ ২ মাস
পি. ভি./আই. পি. ভি. - ১০   সপ্তাহ / ৪ মাস
পি. ভি. - ১৪   সপ্তাহ / ৪ মাস
পি. ভি. - ৯ মাস
পি. ভি./আই. পি. ভি. ১ম বুস্টার ডোজ ) - ১৫ – ১৮ মাস
পি. ভি./ আই. পি. ভি. - ৪- ৬ বছর

(৩) বিসিজি টিকা
বিসিজি টিকা হলো যক্ষ্মার প্রতিষেধক। শিশুর জন্মের ছয় সপ্তাহের মধ্যে এই টিকা দিতে হয়। বিসিজি টিকা দিলে মরণব্যাধি যক্ষ্ম থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এই টিকার শুধু মাত্র একটি ডোজ। বাম হাতের কাধের কাছের হাতের অংশের চামড়ার নিচে এটি দেওয়া হয়। মাঝে মাঝে হালকা ক্ষত বাম লসিকাগ্রন্থি ফুলে যাওয়ার মত কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।

(৪) ডিপিটি টিকা
ডি তে ডিপথেরিয়া, পি তে পারটোসিস বা হুপিং কাশি ও টি তে টিটেনাস। তিনটি মারাত্নক ঝুঁকিপূর্ণ রোগের নাম। ডিপিটি টিকাটি এই তিনটি রোগের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। তাই শিশুর জন্য এই টিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ ।পারটুসিস টিকা দেয়ার সময় অনেকে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। যাদের এ প্রবণতা বেশি বা শরীর দুর্বল তাদের শুধু ডিপথেরিয়া ও টিটেনাসের টিকা দেয়া হয়। টিটেনাস বা ধনুষ্টাঙ্কারের টিকা শিশুদের জন্য খুবই জরুরী।নিচের পোলিও টিকার চার্ট লক্ষ্য করুনঃ
ডিপিটি টিকা - ৬ সপ্তাহ   / ২ মাস
ডিপিটি টিকা - ১০সপ্তাহ   / ৪ মাস
ডিপিটি টিকা  - ১৪ সপ্তাহ / ৪ মাস
ডিপিটি টিকা (১ম বুস্টার ডোজ ) - ১৫-১৮   মাস
ডিপিটি টিকা  - ৪-৬ বছর

(৫) হামের টিকা
হামের টিকা শিশুদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি টিকা। হাম একটি খুব মারাত্নক কষ্টদায়ক একটি রোগ। এই রোগ থেকে বাঁচার জন্য শিশুদের অবশ্যই হামের টিকা দেয়া উচিত। শিশুর ১৫ মাস বয়সে এ টিকা দিতে হয়।

(৬) টাইফয়েড টিকা
টাইফয়েড একটি মারাত্নক ঘাতক ব্যাধি যা শিশুর যে কোনো অঙ্গ বিকল করে দিতে পারে এবং শিশু হারিয়ে ফেলতে পারে তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা। এই রোগ জীবন পর্যন্ত নিয়ে নিতে পারে। তাই সময়মত শিশুদের টাইফয়েড এর টিকা দিতে হয়। দুই বছর বয়সের পর শিশুদের এই টিকাটি তিন বছর পর পর দিতে হয়।

(৭) রোটাভাইরাস টিকা
ডায়রিয়া বাচ্চাদের জন্য একটি হুমকি স্বরূপ। বাংলাদেশের বেশির ভাগ বাচ্চা ছোট বয়সে ডায়রিয়াতে ভোগে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সঠিক পরিচর্যা করা হলে ডায়রিয়া থেকে বাচ্চা সুস্থ্য হয়ে ওঠে। কিন্তু রোটা ভাইরাস জনিত ডায়রিয়া প্রাণঘাতক হতে পারে। তাই ডায়রিয়ার প্রতিষেধক হিসেবে বাচ্চাদের রোটা ভাইরাস এর প্রতিষেধক রোটাভাইরাস ভ্যাকসিন বা আরভি দিতে হবে। ডায়রিয়ার প্রতিষেধকের টিকা তিনটি ডোজে নিতে হয়। প্রথম ডোজ ৬ থেকে ১২ সপ্তাহের বয়সের মধ্যে দিতে হবে। পরবর্তী ডোজ ১০ সপ্তাহ/৪মাসের মাঝে দিতে হবে।

(৮) নিউমোক্কাল ভ্যাকসিন
বর্তমান চিকিৎসা বিজ্ঞানে নিউমোনিয়া বা অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনকে শিশু মৃত্যুহারের অন্যতম কারন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। নিউমোনিয়ার জন্য দায়ী ভাইরাস হল নিউমোকক্কাস (স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনি) ও হেমোফাইলাস ইনইয়ুযেকি। এই দুই ভাইরাস এর প্রতিষেধক হিসেবে এই টিকার কোন বিকল্প নেই। এর জন্য সিজনাল অ্যান্টি ভাইরাল ভ্যাকসিন বা নিউমোক্কাল ভ্যাকসিন যে কোনটি দিলেই হয়। সাধারনত অনূর্ধ্ব পাঁচ বছরের শিশুদের এই টিকা দিতে হয়। নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন দিলে ফুসফুসের সংক্রমণ কম হয় এবং ঝুঁকি কম থাকে।নিম্নোক্ত সময় সীমায় নিউমোকক্কাল টিকা টি দেওয়া হয়-
নিউমোকক্কাল টিকা - ৬ সপ্তাহ / ২ মাস
নিউমোকক্কাল টিকা - ১০ সপ্তাহ / ৪ মাস
নিউমোকক্কাল টিকা - ১৪ সপ্তাহ / ৪ মাস
নিউমোকক্কাল টিকা (১ম বুস্টার ডোজ ) - ১৫ – ১৮ মাস

(৯) ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন
ইনফ্লুয়েঞ্জা একটি ছোঁয়াচে ব্যাধি। এই ভাইরাস প্রধানত মানুষের শ্বসনতন্ত্রকে আক্রমণ করে, ফলে রোগীর হাঁচি, কাশি ও নির্গত মিউকাসের মাধ্যমে ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগ সুস্থ মানুষের দেহে সংক্রমিত হয় । এই রোগে প্রথমে অনবরত হাঁচি হয় ও নাক দিয়ে জল পড়ে, পরে প্রচন্ড গা, হাত, পা বেদনা সহ তীব্র জ্বর হয় । তাই বাচ্চাদের এই রোগের টিকা দেয়া অত্যন্ত জরুরী। এই রোগের জন্য সাধারণত দুই ধরনের টিকা আছে- টিআইবি ও এএআইভি। এর মধ্যে টিআইবি ছয় মাস বয়সে এবং এএআইভি দুই বছর বয়সের পর দিতে হয়।

(১০) চিকেন পক্স টিকাঃ
চিকেন পক্স বা জল বসন্ত একটি ভাইরাস সংক্রমক রোগ। জন্মের ৫ দিনের মাঝে এই রোগ হলে মারাত্মক ভাইরেমিয়া-এ জনিত কারণে বাচ্চার মৃত্যুও হতে পারে। জল বসন্ত প্রতিরোধ করতে শিশুর জন্মের ১২ মাস পরে এবং ৪-১২ বছরের মাঝে দুই ডোজে টিকা দিতে হয়।

(১১) এম এম আর টিকাঃ
এম এম আর মূলত মাম্পস, মিজলস এবং রুবেলা রোগের টিকা। এই রোগ গুলোর টিকা প্রধানত ৪ থেকে ৬ বছরের মাঝেই দিয়ে দিতে হয়।

পরিশিষ্টঃ
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের কল্যাণে অনেক কঠিন কঠিন রোগের টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে এবং হচ্ছে। কিন্তু পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাবে আমরা সেইসব রোগের প্রতিষেধকের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারছি না।
অনেক সময় বাবা মায়েরা সন্তানকে টিকা দেয়া থেকে বিরত থাকতে চায় বিভিন্ন ধরণের কুসংস্কারের কারণে। আবার খুব অল্প বয়সে অনেকে শিশুদের ওষুধ বা ইনজেকশন দিতে চান না। কিন্তু এই ধরণের ভ্রান্ত ধারনা শিশুর জীবনে মারাত্নক বিপর্যয় নিয়ে আসতে পারে। সঠিক সময় সঠিক টিকা প্রদানের মাধ্যমে শিশুরা অনেক ধরণের মরণব্যধি থেকে মুক্তি পেতে পারে।

Create New Account

Course Catalogue
Course 1 Vaccine administration
Course 2 Vaccine management
Course 3 Immunisation data – recording and reporting
Course 4 Catch-up vaccinations

বিঃদ্রঃ
এখানে একাউন্ট তৈরির করার সময় নিজের পেশা ডক্টর লিখুন।

Writer : Syed J Hossain 

Share This
Previous Post
Next Post

Ashalamu-alaikum, I'm Shariar Mahamud Kabbo. I'm a Healthcare Professional . Welcome To My Largest Free Medical Books Download Site.

0 মন্তব্য(গুলি):