রবিবার, ১০ জুলাই, ২০২২

এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স


মা, পেট খারাপ- সিপ্রোসিন খা, পেটে জানি কেমুন করে- দুইটা মেট্রোনিডাজল খা। সবাই যেন ছোটখাটো ডাক্তার। সবচেয়ে বড় ডাক্তার ঔষধের দোকানের কমপাউন্ডার গুলো। এভাবে নিয়ম না মেনে অনবরত এন্টিবায়োটিক বা ঔষধ খেলে কি মারাত্মক পরিনতি হতে পারে আসুন জেনে নিই।

√এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স কী?

সাধারণত ব্যাক্টেরিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন ধরনের ব্যাক্টেরিয়ার জন্য এন্টিবায়োটিকের মাত্রা ভিন্ন হয়। সঠিক পরিমাণে এবং পর্যাপ্ত সময় ধরে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার না করলে ব্যাক্টেরিয়াগুলো পরোপুরি ধ্বংস না হয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তখন এই ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে উক্ত এন্টিবায়োটিকের আর কোনো প্রভাব থাকেনা। এ অবস্থাকে এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স বলে। যখন কেউ এন্টিবায়োটিকের পুরো কোর্স সমপন্ন করেনা তখন এ রেজিস্ট্যান্স প্রাপ্ত ব্যাক্টেরিয়াগুলো তৈরি হয়।

√এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স ভয়াবহ কেন?

আমরা যখন রোগাক্রান্ত হই তখন ডাক্তার আমাদের রক্ত ও অন্যান্য নুমনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠান এবং রোগের জন্য দায়ী ব্যাক্টেরিয়া নির্ণয় করে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য কিছু ঔষধ দিয়ে থাকেন। কিছু ঔষধ খাওয়ার পর খানিকটা ভালো অনুভব করলেই অনেকে মনে করে আমিতো ভালো হয়েই গেছি, আর ঔষধ খাওয়ার দরকার কি? ঔষধ খাওয়া ছেড়ে দেয় এবং ডাক্তারের দেয়া এন্টিবায়োটিকের কোর্স পূর্ণ করেনা। ফলে রেজিস্ট্যান্সপ্রাপ্ত ব্যাক্টেরিয়াগুলো যখন দেহ থেকে বের হয়ে প্রকৃতিতে যায় তখন অন্য সাধারণ ব্যাক্টেরিয়াগুলোকেও রেজিস্ট্যান্স করে ফেলে। ফলশ্রুতিতে যে এন্টিবায়োটিক আগে কাজ করত তখন তা সাধারণ ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধেও আর কাজ করে না। ফলে একই এন্টিবায়োটিকের মাধ্যমে পরবর্তিতে আর রোগ সারেনা। নতুন কোন এন্টিবায়োটিক বা অতিরিক্ত মাত্রার ডোজের প্রয়োজন দেখা দেয়। এভাবে চলতে থাকলে একদিন হয়তো তাঁর রোগ সারাবার কোন বিকল্প ব্যবস্থা আর থাকবেনা।

√এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স কেন দেখা দেয়?

-সঠিক পরিমাণে এবং সময়মতো এন্টিবায়োটিক না নেওয়া হলে।
-প্রয়োজন ছাড়াই এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে থাকলে।
-চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই নিজের ইচ্ছামতো এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে করতে ছেড়ে দিলে।

√এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধের উপায়

-চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক সময়ে সঠিক মাত্রার এন্টিবায়োটিক গ্রহণ করুন।
-ঠাণ্ডা লাগা বা সর্দিজ্বর সাধারণত ভাইরাসের আক্রমণে হয়ে থাকে। আর ভাইরাসের উপর এন্টিবায়োটিক কোন কাজ করতে পারেনা। তাই ঠাণ্ডা লাগলে বা সর্দিজ্বর হলেই এন্টিবায়োটিক খাওয়া শুরু করবেন না।
-চিকিৎসককে বলুন যে খুব প্রয়োজন না হলে যেন আপনাকে এন্টিবায়োটিক না দেয়।
-ডাক্তার যতদিন না বলে ততোদিন পর্যন্ত এন্টিবায়োটিক গ্রহণ বন্ধ করবেন না।

এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স একটি মহাবিপর্যয়। যা একবার হয়ে গেলে আর উপায় নেই। তাই সময় থাকতে আজই সচেতন ও সাবধান হোন।এন্টিবায়োটিক গ্রহনের ব্যাপারে নিজে নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক মাত্রার ও যথাযথ তাঁর কোর্স পুর্ণ করুন। রেজিস্ট্যান্স হওয়ার আগেই সাবধান হোন এবং ঝুঁকিহীন জীবন যাপন করুন।

সূত্রঃ ইন্টারনেট
Share This
Previous Post
Next Post

Ashalamu-alaikum, I'm Shariar Mahamud Kabbo. I'm a Healthcare Professional . Welcome To My Largest Free Medical Books Download Site.

0 মন্তব্য(গুলি):