ইন্টারভিউ শর্টলিস্টিং কি?
মান সম্পন্ন প্রতিষ্টান গুলো যখন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন, তখন এক একটি পদের জন্য চাকুরী প্রার্থীদের নিকট থেকে প্রচুর সংখ্যক আবেদন পত্র জমা পড়ে। সবাইকে ডেকে ইন্টারভিউ নেওয়াটা কষ্টকর ও দুঃসাধ্য। তাই নিয়োগ কর্তা ইন্টারভিউতে কল করার আগে তাদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সাথে মিল রেখে যোগ্য ও অভিজ্ঞ চাকুরী প্রার্থীদের ইন্টারভিউ এর জন্য একটা তালিকা তৈরি করেন। চাকুরীর আবেদনকারী প্রার্থীদের জন্য এই ইন্টারভিউ তালিকা তৈরির প্রক্রিয়াটাকে বলা হয় শর্টলিস্টিং। শর্টলিস্টিং এ যাদের নাম থাকবে, তারাই ইন্টারভিউ এর জন্য কল পাবেন। বিদেশী এনজিও, দেশীয় কিছু নামী দামী ও ভালো প্রতিষ্টান গুলোতে নিয়োগদাতারা চাকুরী প্রার্থীর আবেদন পত্র ও সিভি দেখে শর্ট লিস্টিং করেন।
শর্টলিস্টের মানদণ্ড কিভাবে নির্ধারণ হয়?
১) শিক্ষা
শিক্ষা ক্যাটাগরিটা হচ্ছে শর্ট লিস্টের প্রথম ধাপ। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষাগত যোগ্যতা যা চাওয়া হয়, তা প্রার্থীর আবেদন পত্র ও সিভিতে সঠিক এবং মিল থাকলে সেই আবেদন পত্র গুলো আলাদা করা হয়। বাকী গুলো বাদ দিয়ে দেওয়া হয়।
একটা উদাহরনঃ একটা প্রতিষ্টান মেডিক্যাল এসিসটেন্ট নিয়োগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে বিএমডিসি রেজিস্টার্ড মেডিক্যাল এসিসটেন্ট। এখন নিয়োগ কর্তা যাচাই বাছাই করবেন বিএমডিসি রেজিস্টার্ড মেডিক্যাল এসিসটেন্ট কারা। এদেরকেই শর্ট লিস্টে নিয়ে আসবেন। কারণ বিএমডিসি রেজিস্টার্ড ছাড়াও মেডিক্যাল এসিসটেন্ট এর আবেদন পত্র জমা হবে। তাই নিয়োগ কর্তা সকল আইন কানুন মেনেই বিএমডিসি রেজিস্টার্ড ছাড়া মেডিক্যাল এসিসটেন্ট কোন ভাবেই নিয়োগ দিবেন না।
২) কর্মদক্ষতা ও অভিজ্ঞতা
এর পরের ধাপ হচ্ছে কর্মদক্ষতা। নিয়োগ কর্তা আপনার সিভিতে আপনার কাজের সেকশনে চোখ বুলিয়ে নিবেন। দেখবেন তাদের কাজের সাথে মিল কোন কাজের অভিজ্ঞতা আপনার আছে কিনা। মিল থাকলে আপনার নাম শর্ট লিস্টে চলে আসবে।
একটা উদাহরণঃ
একটা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে চাওয়া হয়েছে ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট এন্ড কেয়ারে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। যদি আপনার এই বিষয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে আপনার নাম শর্ট লিস্টের দ্বিতীয় ধাপ উন্নিত হবে।
৩) প্রশিক্ষণ ও জ্ঞান
প্রশিক্ষণ ও জ্ঞান হচ্ছে নিয়োগের শর্ট লিস্টের তৃতীয় ধাপ। আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা, কর্মদক্ষতা ও অভিজ্ঞতা এর পাশাপাশি কোন প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও জ্ঞান আছে কিনা তা দেখবেন নিয়োগ কর্তা। তাদের কাজের সাথে মিল রেখে আপনার যদি শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কাজের অভিজ্ঞতার বাইরে কোন অতিরিক্ত প্রশিক্ষণ ও জ্ঞান থাকে তাহলে আপনাকে তারা শর্ট লিস্টের তৃতীয় ধাপ পার করে দিবেন। মানে অন্যসকল প্রার্থীর চেয়ে আপনি আরো এগিয়ে গেলেন।
একটা উদাহরণঃ
কোন কোন এনজিও তে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে এইভাবে উল্লেখ করা হয়, ইনফেকশন প্রিভেন্টশন ও কন্ট্রোল এ প্রশিক্ষণ অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এখন আপনার যদি ইনফেকশন প্রিভেন্টশন ও কন্ট্রোল এ কোন প্রশিক্ষণ থাকে, এবং তা যদি সিভিতে উল্লেখ থাকে, তাহলে আপনি এই ধাপটি পার করে শর্ট লিস্টে আরো উপরে উঠে গেলেন।
৪) ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য
সিভি কিই রেসপন্সিভিলিটিস কিংবা কোর কম্পিটিটেন্স নামের একটা সেকশন থাকে। এখানে আপনার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য যেমন টীম ম্যানেজমেন্ট, টীম বিল্ডিং, পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট, কাজের প্রেসার এবং বিভিন্ন ক্রিটিক্যাল মুহূর্ত গুলো কিভাবে কাটিয়ে উঠবেন ইত্যাদি বিষয়ে নিয়ে কিছু শর্ট ওয়ার্ড থাকে। এই সব শর্ট ওয়ার্ড দেখে নিয়োগ কর্তা আপনাকে এই ধাপটাতে সামনে এগয়ে দেন। এবং প্রায় চুড়ান্ত শর্ট লিস্টে আপনার নাম চলে আসে।
উপরের এই চারটি ছাড়াও নিয়োগ কর্তা যদি মনে করেন রেফারেন্স, অতিরিক্ত অভিজ্ঞতা যেমন কম্পিউটার পারদর্শিতা, ইংরেজী ভাষায় দক্ষতা, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ফায়ার ফাইটিং প্রশিক্ষণ, অতীতে কোন আইন বিরোধী কাজে জড়িত নেই, ইত্যাদির কারনে তারা আপনাকে নিয়োগ প্রদান করলে লাভবান হবেন, তাহলে আপনিই হবেন তাদের চুড়ান্ত সিলেকশন।
এইসব কিছু বিচারে নিজেকে আপনি কি মনে করেন? নিয়োগ কর্তার শর্ট লিস্টে আসতে পারবেন তো?
Writer : Syed J Hossain
0 মন্তব্য(গুলি):