◾ চোখের চারপাশে কালোদাগ
বিভিন্ন কারনে এমনটা হয়ে থাকে। আর এমন ডার্কসার্কেলের জন্য চেহারার সৌন্দর্যহানি হয়। এখন সকলেই সৌন্দর্য সচেতন। এমন অনেক রোগী বা আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী আছেন যারা জানেন যে আপনি ডাক্তার তাই দেখা সাক্ষাৎ হলেই আপনাকে বলবে আচ্ছা ভাই//আপু/ডাক্তার "আমাকে রং ফর্সাকারী একটা ক্রীমের নাম বলুন তো। আমার চোখের নিচে কালোদাগ কি করতে পারি?। আমার চুল উঠে যাচ্ছে একটা ভালো সলুশন দিন প্লিজ। আমার মুখে পিমপল অথবা একটা ভালোমানের সানস্ক্রিন এডভাইস করুন""।
একবারও তারা ভাবেন না যে আমিতো গাইনী/শিশু/সাইক্রিয়াটি/কিডনি/হার্ট স্পেশালিষ্ট হতে পারি। আচ্ছা ঠিক আছে আমি একজন জেনারেল ফিজিশিয়ান অথবা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ, তাই বলে কি এভাবে ট্রীটমেন্ট দেয়া যাবে হিস্ট্রি এক্সামিনেশন ছাড়া🤔???
আর যদি তারা ফোনে এমন এডভাইস চান তখন কেমনটা লাগে বলুন, ব্লাইন্ড ট্রীটমেন্ট😥🥴???
কারণসমুহ
------------------------------
🌍পুস্টিহীনতা= ভিটামিন(এ, ডি, ই, কে, সি, বি১২ ইত্যাদি), আয়রন এর অভাবে।
🌍অনিদ্রা/ ঘুমের অভাব=আমাদের সকলের ৬-৭ ঘন্টা রাতে ঘুমানো উচিত (পুর্ন বয়স্ক)। সেই ঘুমের পরিমান যদি কম হয় অথবা রাতের পর রাত যদি নির্ঘুম কাটানো হয় তাহলে চোখের নিচে কালো দাগ পরে।
🌍 খারাপ অভ্যাস=যেমন ঘন্টার পর ঘন্টা কম্পিউটারের সামনে কাজ করা, টিভি দেখা, ল্যাপটপ ব্যবহার, মোবাইলে ফেসবুক/গেমস খেলা এগুলো কাজে চোখ এবং এর চারপাশের মাংসপেশিতে অতিরিক্ত প্রেসার পরে।
🌍 হরমোনের অসামঞ্জস্যতা
🌍বয়সজনিত=বয়সজনিত কারনে চোখের নিচের চামড়া ঝুলে পরা, ভাজ পরা, কালোকালো ছোপ দেখা যায়।
🌍সুর্যরশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব মুখের ত্বকের পাশাপাশি চোখের নিচে ও চারপাশে ডার্ক সার্কেল তৈরি করে।
🌍দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত কফি-সিগারেট-অ্যালকোহল খাওয়া।
🌍 এলার্জি, একজিমা
🌍পানিশুন্যতা= শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে চোখের চারপাশে আদ্রতা হারায়, চামড়া কুচকে যায়। কালোভাব দেখা যায়।
🌍কসমেটিকস= কসমেটিকস এর কারনেও মানে এর ব্যবহার এবং রিমুভ করাতে ভুল হলেও এমন কালোছোপ হয়।
🌍ঠিকমতো চশমা ব্যবহার না করা=মানে পাওয়ারফুল চশমা দেয়া হয়েছে কিন্তুু তিনি তা ব্যবহার না করে চোখ কুচকে কম্পিউটারে কাজ করছেন, দুরের জিনিস দেখচেন এতে চোখের চামড়ায় টান পরছে-ভাজ হয়ে কুচকে যাচ্ছে।
🌍বারবার চোখ রগানোর ফলে চোখের চারপাশের চামড়ায় ঘর্ষন হয়ে দাগ হয়।
🌍যদি কারো চোখ একটু ভিতরের দিকে থাকে মানে আমরা যাকে গর্তের মধ্যে বলি এমন চোখের নিচের দিকে কালোছোপ দেখা যায়, কারন উপরের পাতার ছায়া নিচে পরে এমনটা দেখায়।
🌍 জেনেটিক্যালি=পরিবারের বাবা, মা, ভাই, বোনদের মধ্যে এমন সমস্যা থাকলে নিজেরও এমনটা হতে পারে।
চিকিৎসা
----------------------------------
১।। জেনারেল ট্রীটমেন্ট
২।। মেডিকেল ও সার্জিক্যাল ট্রীটমেন্ট
৩।। ঘরোয়া ট্রীটমেন্ট
৪।। কসমেটিকস ট্রীটমেন্ট
জেনারেল ট্রীটমেন্ট
🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀
👉ডায়েট= পুষ্টিকর খাবার গ্রহন। ভিটামিন-এ,ডি,ই,সি,কে,বি-১২ এবং আয়রন সম্মৃদ্ধ খাবার গ্রহন। কডলিভার অয়েল ক্যাপসুল ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেবন।
👉অন্তত ৬-৭ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
👉একটানা অনেকক্ষন চোখের উপর চাপ পরে এমন কাজ না করা। মাঝেমধ্যে চোখের বিশ্রাম দিতে হবে।
👉নিয়মানুযায়ী চশমা ব্যবহার করা।
👉বারবার চোখ রগড়ানো যাবেনা। চোখ চুলকালে পানির ঝাপটা দেয়া।
👉দুশ্চিন্তামুক্ত থাকা, অতিরিক্ত কফি-সিগারেট-অ্যালকোহল সেবন না করা।
👉দিনে অন্তত ২-৩লিটার পানি পান করা।
👉সুর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষা করতে কালোচশমা ব্যাবহার করা।
👉একজিমা, এলার্জীর সমস্যা থাকলে চর্মরোগর ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
সার্জিক্যাল ট্রীটমেন্ট
🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀
সার্জিক্যাল ট্রীটমেন্টের আগে আপনি ডাক্তারের সাতে যোগাযোগ করে বিভিন্ন ধরনের মেডিকেল ট্রীটমেন্ট আছে সেইটা ট্রাই করুন।
যেমনঃ মেডিকেল ট্রীটমেন্ট----------
👉Depigmenting or pigmentation reducing cream
👉Chemical peels
👉Laser therapy
👉PRP
Cream=Arbutin, Azelaic acid, Kojlic acid, Vit-C, K, Retinol(ঝুলে যাওয়া, পিপপল), Lactic acid
এগুলো চোখের উপরের চামড়ার(superficial layer) মেলানোসাইটকে কমায়। দিনে ২বার করে ৬-৮মাস ব্যাবহার করা হয়।
Chemical peels=Glycolic acid, lactic acid, kojlic acid, mandelic acid, arginine. এগুলো সাধারণত সপ্তাহে ১বার করে ৮-১০বার করা ভালো।
Laser therapy= Nd-YAG, PDL. Laser is best.
PRP=Plasma rich protein. Blood Centrifuge করে তারপর ইনজেক্ট করা হয়।
Filers=Tear tough থাকলে ফিলার করা হয়
হায়ালুরোনিক এসিড দিয়ে।
সার্জিক্যাল ট্রীটমেন্ট--------
👉For Under eye pad=fat tissue remove
👉Deep eye(চোখ গর্তের মধ্যে এমনটা)= Microfat transplant/injection
ঘরোয়া ট্রীটমেন্ট
🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀
👉প্রতিদিন সকালে ও রাতে নারিকেল তেল দিয়ে মাসাজ(হালকাভাবে)। এটা চোখের চারপাশকে ময়েশ্চারাইজ করে।
👉টকদই+মধু
👉মধু+গোলাপজল রাতে দেয়া
👉অ্যালোভেরা জেল(ন্যাচারাল)
👉ফ্রোজেন টি-ব্যাগ (এতে কালোছোপের পাশাপাশি ফোলাভাবও কম দেখায়)
👉আলুর জুস চোখের চারপাশে ঘুমের আগে
👉শসা পাতলা করে স্লাইস করে কিছুক্ষণ চোখের উপরে রাখা।
কসমেটিকস
🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀🏀
👉কসমেটিকস ব্যবহারে সাবধান হতে হবে। অতিরিক্ত ভারী, সুগন্ধিযুক্ত কসমেটিকস চোখে লাগানো তেকে বিরত থাকুন।
👉প্রতিদিন অবশ্যই চোখের চারপাশে হালকা করে সানস্ক্রিন লাগাতে হবে।
👉রাতে বাসায় ফিরে মুখের পাশাপাশি চোখের চারপাশের মেকআপ সুন্দরভাবে ধীরেধীরে তুলতে হবে।
👉মেকআপের আগে ময়েশ্চারাইজার লাগান তারপর কনসিলার তারপর কম্প্যাক্ট পাউডার লাগাতে হবে। ময়েশ্চারাইজার না লাগিয়ে সরাসরি কনসিলার লাগালে চোখের ফাইন লাইনগুলো ভেসে থাকবে, এতে মেকআপ আরো খারাপ দেখাবে। তাই চোখের কালোছোপ ঢাকতে এভাবে মেকআপ করা ভালো।
ট্রীটমেন্ট দিতে হবে হিস্ট্রি, এক্সামিনেশন করে। এবং কোন ট্রীটমেন্ট কার জন্য লাগবে সেইটা রোগী দেখেই তারপর দিতে হবে।
ধন্যবাদ
Dr. Tania Hafiz
2003-2004
Z.H Sikder Women’s Medical College and Hospital
0 মন্তব্য(গুলি):