সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০

সমস্ত প্রকার স্যালাইন (Fluid) ব্যবহার ও কাজ সম্পর্কে জানুন । ডাঃ কাউসার উদ্দিন

সমস্ত প্রকার স্যালাইন (Fluid)  ব্যবহার ও কাজ সম্পর্কে জানুন । ডাঃ কাউসার উদ্দিন


🌱 অসংখ্য রোগী তারল্য সংকট নিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসেন। সেই সংকট সমাধানে তাদের শরীরে দিতে হয় বিভিন্ন প্রকার তরল! যেসব তরলের সাথে আমরা খুব বেশি পরিচিত সেগুলো হল - Hartsol, 5%DNS, 5%DA, 0.9%NS. দেখি একটু চিন্তা করে কোনটা কোথায় দেওয়া যায়! 🤔

🌹 মাত্র একটা লাইন যদি মনে রাখি তাহলেই পুরো টপিকসের অনেকটা পড়া হয়ে যাবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগীর যে ফ্লুইড প্রয়োজন হয় সেটা isotonic fluid. আর Hartsol, 5%DNS, 0.9%NS যা সবই isotonic fluid. এদের মধ্যে plasma'র কাছাকাছি কোয়ালিটির ফ্লুইড হল Hartsol. কিন্তু 5%DA হল hypotonic, অন্য কিছু হাতের কাছে না থাকলে এটাই তখন শেষ ভরসা।
(একটা বিষয় নিয়ে কনফিউশন হতে পারে, আর সেটা হল 5%DNS শরীরে ঢোকার আগে hypertonic, আর ঢোকার পর isotonic.  আর 5%DA ঢোকার আগে isotonic, আর ঢোকার পর hypotonic. এখানে পরবর্তী অবস্থা বুঝানো হইছে!)

🌴 এবার দেখবো বিভিন্ন প্রকার সমস্যা ও তার সম্ভাব্য সমাধান !

🍂 More than 15% Deep burn
🍃 burn এ plasma লস হয়। আর plasma এর কাছাকাছি কোয়ালিটির isotonic fluid হল Hartsol. না থাকলে 5%DNS > না থাকলে 0.9%NS > না থাকলে 5%DA

🍂 Fracture femur with severe anaemia
🍃 এখানেও সহজ চিন্তা। blood দরকার, কিন্তু নাই। এর কাছাকাছি ফ্লুইড Hartsol, তাই এটাই দিবেন। না থাকলে 5%DNS > না থাকলে NS > না থাকলে 5%DA

🍂 Head injury
🍃 এখানেও blood লস। দু রকম লস হতে পারে, এক- from body to outside, দুই- blood blood vessel to extravascular space. অর্থাৎ এ অবস্থায় blood খুব বেশি লস হয়ে রোগী শকে গেলে blood ই দিতে হবে। আর সেটা না পেলে blood এর মত যেকোন ফ্লুইড, অর্থাৎ কোন isotonic fluid. এখানে 5% DA বাদে বাকি সবই isotonic, তাই এটা বাদে বাকি যে কোনটাই দেওয়া যাবে। 5%DA হল hypotonic কারণ tone বাড়ানোর 0.9%NaCl এখানে নাই। আর এ কারণে 5%DA দিলে সেটা শুধু blood vessel এই থাকবে না, vessel থেকে বের হয়ে brain cell এ ঢুকবে, ফলে হবে cerebral oedema যা head injury হওয়ার ফলে সৃষ্টি হওয়া ICP কে আরো বাড়াবে, আর injured brain cell এ perfusion বাধাগ্রস্ত করবে। তাই head injury তে shock এর ট্রিটমেন্ট এর জন্য যেকোন isotonic fluid যেমন Hartsol, 5%DNS, 0.9%NS যে কোনটাই দেওয়া যাবে; পাশাপাশি বেড়ে যাওয়া ICP কমাতে দিতে হতে পারে hypertonic fluid যেমন mannitol যা brain cell ও extravascular space থেকে পানি টেনে vessel এ নিয়ে আসবে। অর্থাৎ no hypotonic fluid (5%DA)

🍂 Intestinal obstruction
🍃 এখানে plasma লস হয়। আর plasma এর কাছাকাছি কোয়ালিটির fluid হল Hartsol, তাই এটা দিবেন। না থাকলে 5%DNS > না থাকলে 0.9%NS ও 5%DA দুটোই একটার পর একটা (কারণ এখানে রোগী NPO থাকে, তাই glucose দরকার) > না থাকলে 0.9%NS > না থাকলে 5%DA

🍂 Cholera
🍃 Isotonic fluid লস হয়, তাই isotonic fluid দিবো। উপরে কয়েকবার পড়ছি Hartsol, 5%DNS, 0.9%NS সবগুলোই isotonic। তাই এদের যেকোনটা দেওয়া যায়, তবে হাতের কাছে এই তিনটাই থাকলে Hartsol ই বেস্ট! কারণ cholera তে প্রচুর K লস হয় stool এর সাথে ও renal flow কমে গিয়ে renin angiotensin system activate হয়ে। এর সমাধান আছে একমাত্র Hartsol এ, কারণ এতে K আছে ও তুলনামূলক কম sodium chloride থাকে, যার পরিবর্তে আছে sodium lactate (তাই একে Ringer's lactate ও বলে)। কিন্তু chloride কম থেকে সুবিধা কি? hyperchloraemic metabolic acidosis হওয়ার সম্ভাবনা কম। এত কিছুর পরেও cholera তে আমাদের Hartsol এর চেয়েও বেশি পছন্দের হল অন্য আর একটা isotonic fluid - cholera saline! কারণ Hartsol এ sodium lactate থাকলেও, cholera saline এ আছে sodium acetate. acetate থাকলে সুবিধা কি? আমরা জানি Cholera তে প্রচুর HCO3 লস হয়ে metabolic acidosis হয়। cholera saline থাকা acetate মাংসপেশী তে ঢুকে মেটাবলিজম হয়ে acetyl-CoA তৈরি করে, এই acetyl-CoA থেকে TCA cycle শেষে তৈরি হয় bicarbonate যা acidosis কারেক্ট করবে। তাই তুলনামূলক কম chloride, সাথে acetate ও K আছে এমন fluid হিসেবে cholera saline ই আমাদের প্রথম পছন্দ > না থাকলে Hartsol > না থাকলে 5%DNS > না থাকলে 0.9%NS

🍂 Diarrhoea /Vomiting (moderate to severe dehydration)
isotonic fluid লস হয়। তাই Hartsol, 5%DNS, 0.9%NS যেকোনটা দেওয়া যাবে।

🍂 Diabetes Mellitus with any upper condition
🍃 রক্তে গ্লুকোজ বেশি। তাই গ্লুকোজ আছে এমন saline যেমন 5% DNS বা 5%DA না দেওয়াই ভাল। আর দিলেও careful glucose monitoring.

🍂 Hypoglycaemia (unconscious patient)
🍃 গ্লুকোজ কম তাই গ্লুকোজ আছে এমন কিছু দিতে হবে যেমন 5%DA > না থাকলে 5%DNS. কেন 5%DNS সেকেন্ড অপশন? কারণ NS প্রেশার বাড়াতে পারে। তবে এই অবস্থায় গ্লুকোজ এত বেশি কমে যায় যে শুধু 5% এ লাভ হয়না। তাই বেশি ভাল হয় নির্দিষ্ট পরিমাণ 20-25%DA দিলে। তারপর দীর্ঘ সময় saline দেওয়ার প্রয়োজন হলে 10%DA

🍂 Oedema with circulatory shock
🍃 hypotonic fluid ইডিমা বাড়ায় colloidal osmotic pressure কমিয়ে, তাই 5%DA বাদ। বাকিগুলো- যেমন Hartsol, 5%DNS, 0.9%NS দেওয়া যাবে। তবে সাথে কেয়ারফুল মনিটরিং, কারণ এদেরকেও মাত্রাতিরিক্ত দিলে hydrostatic pressure বেড়ে গিয়ে ইডিমা হতে পারে।

🍂 IV channel মেইনটেইন করতে isotonic 0.9% NS > না থাকলে 5%DNS > না থাকলে 5%DA

🍂 রোগী NPO আছে, 5%DA ও 0.9%NS একটার পর একটা > না থাকলে 5%DNS

🍂 Bleeding হইছে বা সামনে হওয়ার চান্স আছে, Hartsol > না থাকলে 5%DNS > না থাকলে 0.9%NS > না থাকলে 5%DA

🍂 রক্তে sodium অনেক কম, বা cerebral oedema কমাতে হবে এমন অবস্থায় isotonic 0.9% NS এর পরিবর্তে বিভিন্ন প্রকার hypertonic saline যেমন 2% 3% 5% 7% 23% NS ব্যবহার করা হয়! কিন্তু খুব কেয়ারফুল!

🍂 যেসব শিশুদের বয়স ০-১ বছর, তাদেরকে দেওয়া হয় 10% Baby saline (10% Dextrose + 0.225% NaCl)

🍂 যেসব শিশুদের বয়স ১-৬ বছর, তাদেরকে দেওয়া হয় 5% Baby saline (5% Dextrose + 0.225% NaCl)

🍂 যেসব শিশুদের বয়স ৬-১৪ বছর, তাদেরকে দেওয়া হয় Junior saline (5% Dextrose + 0.45% NaCl)

🌿 রোগীর যে কোন অবস্থায় যে fluid ই দিই না কেন, দিয়ে বসে থাকলে হবে না। fluid overload হচ্ছে কিনা সেটা মনিটরিং করতে হবে। দেখতে হবে central venous pressure, urine output. তা না হলে hydrostatic pressure বেড়ে গিয়ে pulmonary oedema, cerebral oedema, generalized oedema হতে পারে। cardiac workload বেড়ে হতে পারে heart failure.
অন্যদিকে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু fluid যদি ঠিকঠাক সময়ে না দিই, তবে renal perfusion কমে renal failure হতে পারে। severe dehydration এ circulatory failure, shock হয়ে রোগী অক্কা পেতে পারে। তাই সর্বদা check & balance!

আমি শুধু কিছু মৌলিক বিষয় জানানোর চেষ্টা করেছি, যাতে করে বিষয়টা কিছুটা ইজি হয়। এটাই সব না, অনেকে এ ব্যাপারে আরো ভাল জানেন। ধন্যবাদ। 🙂

শনিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২০

একটুখানি লেখাপড়া - Asthma (Dr. Kawsar)

🌿 একটুখানি লেখাপড়া 😀

🍂 Asthma 😤


💞 টোনা-টুনির সংসার। বিয়ে হয়েছে কিছুদিন হল। ঘরে বাইরে দুজন মাত্র। ঘরের সব কাজ টুনির তাই একারই করতে হয়। টুনির আবার একটু শ্বাসের দোষ আছে। ধুলাবালি ঝাড়ু দিতে গেলে টুনির শ্বাসের টান ওঠে (breathlessness), শ্বাস ছাড়তে বেশ কষ্ট হয় (expiratory wheeze), বুকটা কেমন ধরে আসে (chest tightness), সাথে অল্প কাশি হয়। একটু পরিশ্রমের কাজ করলে (exercise), আর নাকে ধুলাবালি গেলেই (dust allergy, airborne allergens, pollutants, mite) টুনির এ সমস্যটা বেশি হয়। এমনকি একটু ঠান্ডা পানিতে গোসল করলেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয় (cold exoposure), সকাল ও সন্ধ্যায় যখন ঠান্ডা একটু বেশি থাকে তখন শ্বাসে কষ্ট হয় (diurnal pattern)। টুনি আবার বেশ বেছে বেছে খায়, কারণ কিছু খাবারে টুনির সারা শরীরে র‍্যাশ ওঠে, শুরু হয় চুলকানি। টুনির আবার বুক ধরফরও করে। কয়েকদিন আগে এক গ্রাম্য চিকিৎসক তাকে propanol (non selective beta blocker - causes bronchoconstriction) নামের কি একটা ওষুধ দিছিলো, খেয়ে তো তার অবস্থা কাহিল, শ্বাসকষ্টে যায় যায় অবস্থা! এমনকি ব্যাথার ট্যাবলেট (Aspirin, NSAID) খেলেও তার এই কষ্ট বাড়ে।

🍂 টুনির স্বামী গোবেচারা টোনা সারাদিনই কাজে বাইরে থাকে। সেদিন সন্ধ্যায় টুনি পাশের বাসার ভাবীর বাসায় বেড়াতে গিয়ে একটা পান দেয় মুখে (betel nuts contains methacholine), আর তার কিছুক্ষণ পর থেকেই টুনির প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। টোনা কাজ শেষে রাত্রিরে বাড়িতে এসে দেখে টুনির কষ্টে কাতরাচ্ছে। সে আর দেরী না করে টুনিকে নিয়ে পাশের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে ডা. বকুল গরমে কুলকুল করে ঘেমে ইমার্জেন্সি ডিউটি করছিলো আর চেয়ারে বসে ঝিমাচ্ছিলো। রোগী আসতে সে তন্দ্রা ভেঙে রোগীর কাছে যায়, শোনে উপরের সমস্ত হিস্ট্রি। তারপর স্টেথোটা রোগীর বুকে ধরে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করে।

টুনি ঘনঘন শ্বাস নিচ্ছে মিনিটে ৩০ বার (Tachypnoea), আর শ্বাস ছাড়ার সময় বাঁশির মত একটা শব্দ হচ্ছে (expiratory wheeze), পালসও বেশি - 110/min (tachycardia)। টুনির নাম জিজ্ঞেস করতেই সে বহু কষ্টে ভেঙে ভেঙে কয়েক শ্বাসে নিজের নামটা বলতে পারলো (inability to complete sentence in 1 breath)। সবকিছু মিলিয়ে ডা. বকুলের কাছে এটাকে Asthma মনে হলো। Spirometre নাই, তবে একটা Peak flow metre আছে, সেটা দিয়ে FEV1 দেখলো কম - 40%।
মনে মনে চিন্তা করলো কাল সকাল আর দুপুরেও সে এটা দেখবে কারণ asthma তে FEV1 এর diurnal variation হয়। যদি সকালে ও সন্ধ্যায় দিনের অন্য সময় অপেক্ষা FEV1 20% কমে হয় তবে এ রোগের ব্যাপারে অনেকটা নিশ্চিত হওয়া যাবে। অন্যভাবেও নিশ্চিত হওয়া যায়, রোগীকে যদি bronchodilator বা glucocorticoid দেওয়ার পর তার শ্বাসকষ্টের উন্নতি হয়। টুনি যেহেতু তার এলার্জির সমস্যা বলেছে, সেহেতু asthma হওয়ার চান্সই অনেক বেশি। আর তার এলার্জির ব্যাপারে নিশ্চিত হতে কাল Skin Prick টেস্ট এবং সাথে CBC (eosinophilia থাকতে পারে) ও একটা S. IgE করবে (এলার্জিক কন্ডিশনে বাড়ে)। যেহেতু শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে, তাই একটা বুকের এক্সরেও করা উচিৎ। যদিও asthma এর এক্সরে তে তেমন কিছু পাওয়া যায়না, তবে asthma ছাড়া অন্য কোন সমস্যা আছে কিনা সেটা আলাদা করা যাবে। পাশাপাশি একটা ABG করতে পারলে ভাল হত, কিন্তু সেটা এখানে সম্ভব না। ওটি থেকে পালস অক্সিমিটারটা এনে দেখলো SpO2 কম, 92%!

🍃 সব কিছু দেখেশুনে বকুল এটাকে আপাতত acute exacerbation of bronchial asthma ডায়াগনোসিস করলো, আর সে অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করলো! (টুনির শ্বাসকষ্ট বেশি, কাশি অল্প! যদি উল্টোটা হত, অর্থাৎ কাশি বেশি, আর কাশতে কাশতে অল্প শ্বাসকষ্ট, তবে তাকে বলে cough variant asthma)

> SpO2 কম, তাই অক্সিজেন দিল।
> নেবুলাইজার মেশিন দিয়ে bronchodilator SABA (Salbutamol)+ LAMA (Ipratropium bromide) দিল হাই ডোজে। এতে শ্বাসনালী প্রসারিত হয়ে শ্বাস নিতে সুবিধা হবে। নেবুলাইজার না থাকলে ইনহেলার দিয়েও এ ওষুধগুলো দেওয়া যায়।
> ইনজেকশন Hydrocortisone দিলো যা শ্বাসনালীর প্রদাহ কমিয়ে তাকে সংকুচিত হতে বাঁধা দিবে, এতে বাতাস চলাচলে সুবিধা হবে৷ রোগীর মুখে খেতে কোন অসুবিধা না হলে ইনজেকশন এর পরিবর্তে ট্যাবলেট prednisolone দেওয়া যায়।

এতেও রোগীর উন্নতি না হলে এবং FEV1 30% এর নিচে থাকলে ইনজেকশন magnesium salt বা ইনজেকশন aminophylline দেওয়া যায়। aminophylline দিলে একটু সাবধানে, কারণ এটা cardiac arrhythmia করে।

acute asthma এর চিকিৎসা ওই উপরের টুকুই। অনেক সময় রোগীর dehydration থাকে, কারণ ঘনঘন শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য insensible water loss হয়, সেক্ষেত্রে আইভি ফ্লুইড দেয়া যায়।
সাথে সাথে মনে রাখতে হবে, salbutamol হাই ডোজে বা দীর্ঘ সময় ব্যবহার করলে প্লাজমার পটাশিয়াম বেশি বেশি ব্লাড সেলের মধ্যে ঢুকে যেয়ে হতে পারে hypokalemia, সেক্ষেত্রে পটাশিয়াম সাপ্লিমেন্টেশন দিতে হতে পারে।

🍃 উপরের চিকিৎসা চলার পাশাপাশি আঁধা ঘন্টা পরপর রোগীর FEV1 (PEF) টেস্ট ও SpO2 দেখা চলতে লাগলো। দেখা গেলো আগের থেকে রোগীর উন্নতি হচ্ছে, অবস্থা ভালর দিকে (FEV1 >50%, SpO2 >92%)। 😇

দু'দিন সকালে রোগী মোটামুটি সুস্থ। ইতোমধ্যে উপরের পরীক্ষাগুলো শেষে এটা নিশ্চিত হওয়া গেল টুনির Asthma আছে। acute exacerbation এখন নিয়ন্ত্রণে, রোগীকে ওষুধ লিখে ছুটি দেওয়া যায়।

🍂 Asthma এর সাধারণ চিকিৎসা Step up হিসেবে দিতে হয়, অনেকটা ডায়বেটিস প্রেশারের চিকিৎসার মত add on করে করে। যত কিছু দিয়েই চিকিৎসা দেই না কেন, আমাদের উদ্দেশ্য একটাই, শ্বাসনালী প্রসারিত রেখে সুষ্ঠু বাতাস চলাচল অব্যাহত রাখা।

> Step1: inhaled SABA (Salbutamol /Terbutaline) রোগীকে বলতে হবে প্রয়োজনমত নিবেন, যখন শ্বাসকষ্ট বেশি হবে বা যখন কোন ভারী কাজ করতে যাবেন যে কাজ করার পর শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে।

এতে ভাল কাজ না হলে উপরের সাথে,
> Step2: লো ডোজে (400 microgram) inhaled Glucocorticoid (Beclomethasone/Budesonide/Fluticasone/Mometasone/Ciclesonide) দিতে হবে। এট উপরের মত প্রয়োজনমত না, কয়েকমাস বা দীর্ঘদিন চালিয়ে যেতে হবে
অনেক রোগী আছে যাদের ক্ষেত্রে steroid contraindicated, বা রোগী ইনহেলার নিতে চায় না, বা শ্বাসের কষ্ট অতটা বেশি না, তাদের ক্ষেত্রে inhaled Glucocorticoid এর পরিবর্তে oral Leukotriene receptor inhibitor (Montelukast) বা Phosphodiesterase inhibitor (Theophylline/Doxophylline) দেওয়া যায়।

এতে কাজ না হলে,
> Step 3: Step 2 এর inhaled Glucocorticoid এর ডোজ বাড়িয়ে (400 থেকে 800) দিতে হবে।
এতে কাজ না হলে এর সাথে inhaled LABA (Salmeterol /Formoterol) দিতে হিবে। এই ওষুধ inhaled Glucocorticoid এর সাথে কম্বিনেশন হিসেবে পাওয়া যায় (Salmeterol+Fluticasone), তখন সেটাই দেওয়া হয়, রোগীর নিতে সুবিধা হয়।

এতেও কাজ না হলে,
> Step 4: inhaled Glucocorticoid এর ডোজ আরো বাড়িয়ে (800 থেকে 2000) দিতে হবে। সাথে উপরের Step 3 এর মত inhaled LABA (Salmeterol /Formoterol) থাকবে। এখানে সাথে আরো দেওয়া যায় Leukotriene receptor inhibitor (Montelukast) বা Phosphodiesterase inhibitor (Theophylline/Doxophylline)।

এত কিছুতেও কাজ না হলে,
> Step 5: প্রতিদিন সকালে oral Glucocorticoid (Prednisolone) দেওয়া হয় (যত কম দেওয়া যায় ততই ভাল)।
oral Glucocorticoid এও কাজ না হলে একটা নতুন ওষুধ monoclonal antibody (Omalizumab/Mepolizumab) দেওয়া যায় যা S. IgE ও Eosinophil এর বিরুদ্ধে কাজ করে।

এই 5 step এ Asthma এর চিকিৎসা শেষে রোগী ভাল বোঁধ করলে উপরের যে inhaled অথবা oral Glucocorticoid দেওয়া হচ্ছে তার ডোজ আস্তে আস্তে কমাতে হবে কারণ, কারণ Glucocorticoid গুলো iatrogenic Cushing Syndrome করে, করে osteoporosis. osteoporosis প্রিভেন্ট করতে oral Bisphosphonate (Ibandronic acid) দেওয়া হয়।

🍃 নিয়মিত ওষুধ সেবন আর যেসব কারণে শ্বাসকষ্ট বাড়ে সেসব পরিহার করে টুনি এখন অনেক সুস্থ। টোনাটুনির সুখের সংসার। দেখতে দেখতে অনেকগুলো দিন পার হয়৷ হঠাৎ একদিন টুনির মাসিক বন্ধ হয়ে যায়, কাঠি পরীক্ষায় দেখা যায় টোনা বাবা হতে চলেছে। সেই খুশিতে টোনা মিষ্টি নিয়ে ডা. বকুলের চেম্বারে এসে হাজির। টুনির মা হওয়ার খবর শুনে ডা. বকুল টোনাকে টুনির Asthma এর ব্যাপারে কিছু পরামর্শ দেয়।

> Asthma পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, তা না হলে বাচ্চার ক্ষতি হবে।

> আগের ওষুধ সব চলবে। এসব ওষুধে বাচ্চার কোন ক্ষতি হয়না। এমনকি বুকের দুধ খাওয়াতেও কোন সমস্যা হয়না।

> রোগী oral Glucocorticoid (prednisolone) প্রতিদিন 7.5mg এর বেশে খেলে, ডেলিভারীর দিনে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে injection Glucocorticoid (Hydrocortisone 100 mg) দিতে হবে দিনে ৩ থেকে ৪ বার, এটা ফিটাল ডিসট্রেস কমাবে।

> বাচ্চা ডেলিভারীর সময় মা'কে Misoprostol (Cytomis) ট্যাবলেট দেওয়া হয়, যা bronchospasm করতে পারে। তাই এটা ব্যবহারের পর Asthma আক্রান্ত মায়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।

উপদেশ দিয়ে ডা. বকুল টুনিকে একদিন নিয়ে আসতে বলে গর্ভকালীন চেকআপের জন্য। শেষে টোনাকে আবারো নিচের কথাটি স্মরণ করিয়ে বিদায় দেয়,

'ও টোনা আমার কথা মন দিয়ে সব শোনো,
তোমার টুনি ওষুধ খেতে ভুলে যায়না যেনো!' 🤗

Blog Writer : Dr. Kawsar (DMC)

একটুখানি লেখাপড়া - Enteric Fever (Dr. Kawsar)

🍂 একটুখানি লেখাপড়া 😀
🌿 Enteric Fever


🌷 যে টেস্টের রিপোর্ট দেখলেই বিরক্তি উদ্রেক হয় সেটা widal test. বিশেষ করে গ্রাম-গঞ্জে এমনকি শহরেও হর হামেশা শুধু এই টেস্ট দিয়েই অনেকে টাইফয়েড (entetic fever) ডায়াগনোসিস করেন, বিশেষ করে হাতুড়ে শ্রেণী! সে এক বিচিত্র কারবার! যদিও অনেকে জানে যে এটি non specific টেস্ট, তবুও সেটি বিলুপ্ত না হয়ে এখনো বহাল তবিয়তে টিকে আছে কিছু মানুষের কল্যাণে! widal test এর মাধ্যমে salmonella তে যে H antigen (flagellar) ও O antigen (somatic) ডিটেক্ট করা হয় তেমন এন্টিজেন আরো অনেক ব্যাকটেরিয়ার আছে, যার ফলে প্রায়ই এটা false positive রেজাল্ট দেয়?


🌱 Enteric fever কেন বলে?


🍂 বলা হয় এই জন্য - এই fever এর জীবাণু বসবাস করে বিভিন্ন প্রাণীর enteron (gut) এ, ছড়ায় enteron থেকে অর্থাৎ feco oral রুটে, এটাক করে প্রথমে enteron কে, আর enteric symptoms ই বেশি থাকে!


🍂 Enteric fever এর কারণ দুটো Bacteria:
> Salmonella Typhi - টাইফয়েড
> Salmonella Paratyphi A & B - প্যারাটাইফয়েড
এরা আক্রমণ করলেই যে fever হবে বিষয়টা এমন না। তারা gut mucosa ক্রস করে যদি সিস্টেমে আসে, অর্থাৎ invasive salmonella হয় তবেই fever হবে। সব salmonella strain কিন্তু invasive না, যারা invasive তাদের এটাকের ১০-১৪ দিন পর সাধারণত জ্বর আসে, তাই এটাই তাদের incubation period.


🍂 ব্যাকটেরিয়া gut থেকে system এ এসে সংখ্যাবৃদ্ধি করে - হয় bacteraemia, আর এরপরই fever. ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা যত বাড়তে থাকে - জ্বর ও তত বাড়তে থাকে। আর এ কারণেই typhoid fever হয় step ladder প্যাটার্নের এবং continuous fever, অর্থাৎ জ্বর আস্তে আস্তে ৪-৫ দিন ধরে বাড়তে থাকে (insidious), আবার আস্তে আস্তে কমতে থাকে!
এই জ্বরে bacteraemia এত বেশি হয় যে neutrophil গুলো তাদের সাথে পেরে ওঠে না, ফলে neutrophil মরতে মরতে সংখ্যা কমতে থাকে - তাই রক্তে হয় neutropenia, আর পায়খানার সাথে যায় leucocytes.
জ্বরের সাথে malaise, headache, myalgia বিশেষ করে limb pain এসব থাকে.
রোগের শুরুতে প্রথম সপ্তাহে আমরা তাই এসব symptoms পাবো, প্লাস CBC তে neutropenia পাবো, প্লাস যেহেতু bacteraemia যেহেতু blood culture পজিটিভ হবে!


🍂 প্রথম সপ্তাহ শেষে ব্যাকটেরিয়াগুলো রক্তে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে যাবে, ফলে তৈরি হবে bacterial emboli - যারা superficial capillary ব্লক করে Rose Spot rash করবে, সাথে করতে পারে epistaxis.
যেহেতু ব্যাকটেরিয়ারা ক্লান্ত, তাই বিশ্রাম নিতে তারা তারপর আশ্রয় নেবে শরীরের বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে lymphoid tissue গুলোতে। lymphoid tissue সবচেয়ে বেশি থাকে intestine এ Peyer's patch ও lymphoid follicle হিসেবে। যেখানে ব্যাকটেরিয়া আশ্রয় নেওয়ার ফলে সেগুলো ফুলেফেঁপে উঠে। ileocecal junction এর lymphoid follicle গুলো ফুলে উঠায় পায়খানা আর সহজে বের হতে পারে না, হয় constipation.
কিন্তু ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে lymphoid follicle গুলো ততটা developed না, তাই সেগুলো ফুলে উঠে constipation হওয়ার চান্স নাই, অর্থাৎ শিশুদের constipation হয় না।
বড়দের constipation এর পর এবং শিশুদের শুরুতেই ব্যাকটেরিয়াগুলো intestinal mucosa কে নষ্ট করা শুরু করে, হয় mucosal ulceration - যার ফলে mucosa এর absorptive power ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফলে হল diarrhoea ও vomiting.
ডায়রিয়া শুরু হলে ব্যাকটেরিয়াগুলো পায়খানার সাথে বাইরে বের হতে শুরু করে, ফলে stool culture পজিটিভ হয়।
আর এ কারণেই টাইফয়েডের শুরুর দিকে blood culture পজিটিভ হলেও, stool culture পজিটিভ হয় পরের দিকে, তারও বেশ পরের দিকে কিছু ব্যাকটেরিয়া urine এর সাথে বের হয় - হয় পজিটিভ urine culture.
mucosal ulceration খুব গভীর হলে হতে পারে intestinal perforation ও haemorrhage.
আমরা জানি spleen ও একটা lymphoid organ, তাই ব্যাকটেরিয়াগুলো সেখানেও যায় বিশ্রাম নিতে - হয় splenomegaly, হাত দিয়ে palpate করা যায়।


🍂 বিশ্রাম শেষ হলে দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষের দিকে ব্যাকটেরিয়াগুলোতাদের পূর্ণ শক্তি নিয়ে সদলবলে বের হয় আবার সিস্টেমকে আক্রমণ করতে! ফলাফল ভয়াবহ, করে অসংখ্য titis - nephritis, myocarditis, cholecystitis, osteomyelitis, meningitis, etc. ফাইনালি coma & death!
এটা মনে করার কোন কারণ নেউ যে complication শুধু দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষেই হবে। যদি প্রথম সপ্তাতেই bacteraemia মাত্রাতিরিক্ত হয়, complications তখনও হতে পারে!
তবে সুখের বিষয় হল, এতসব complications কিছুই হবে না যদি সময়মত রোগ ধরে চিকিৎসা করা যায়।


🌱 প্যারাটাইফয়েড কি?


🍂 টাইফয়েড এর মতই, শুধু পরিমাণে অল্প। যেমন- অল্প সময়ে প্রকাশ পায়, অল্প জ্বর, অল্প কমপ্লিকেশন, অল্প দিনে ভাল হয়। শুধু একটা জিনিস বেশি, আর তা হল Rose spot rash.


🌱 রোগ ধরবো কিভাব?

🍂 সেসব কিন্তু অলরেডি পড়া হয়ে গেছে!
sign symptoms কি থাকবে জেনেছি। খাবার দাবার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার হিস্ট্রি নিতে পারি।
আর টেস্ট-
প্রথমে CBC, Blood Culture.
পরে Stool Culture.
তারও পরে প্রয়োজনে Urine Culture.


🌱 চিকিৎসা কি হবে!


🍂 এখানেও সেই পুরান কাসুন্দি! অনেকেই যা দিয়ে শুরু করেন তা হল Ceftriaxone বা Cefotaxime. খুবই কার্যকর, কিন্তু এগুলো দেয়া মানে শুরুতেই মশা মারতে কামান দাগার মত অবস্থা! কারণ salmonella হল গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া। তাই শুধু তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর এমন এন্টিবায়োটিকই যথেষ্ট, যেমন-
> Chloramphenicol (আজকাল দেওয়া হয়না, bone marrow suppression, aplastic anaemia, hypersensitivity reaction করে)
> Co-trimoxazole (এটাও আজকাল দেওয়া হয়না, sulphur আছে তাই অনেক বেশি hypersensitivity reaction করে)
> Ampicillin (এটাও দেওয়া হয়না, আগে দেওয়া হত। দু একটা কোম্পানির আছে)
> Ciprofloxacin (খুবই কার্যকর, কিন্তু ইচ্ছেমত খাওয়ায় অনেকের ক্ষেত্রেই রেজিস্ট্যান্ট)
> Azithromycin (Ciprofloxacin রেজিস্ট্যান্ট হলে এটা দেয়া হয়, তবে খুব একটা কার্যকর না)
> Cefixime (আজকাল বেশ ব্যবহার হচ্ছে। বেশ কার্যকর, আর injectable Ceftriaxone এর একটা ভাল বিকল্প third generation cephalosporin এটি. orally দেয়া যায়। তবে মনে রাখতে হবে, Cefixime এর সাধারণ ডোজ 8mg/kg/day হলেও - enteric fever এ এর ডোজ 20mg/kg/day)
★ ওষুধ দিতে হবে ১৪ দিন!


🌿 চিকিৎসা শেষে রোগী এখন সুস্থ, তবে একটা ঝামেলা আছে! এ ঝামেলা সবার ক্ষেত্রে না, ৫% রোগীর ক্ষেত্রে বিশেষ করে যাদের cholecystitis ডেভেলপ করে তাদের GB এর মধ্যে Salmonella ঘাপটি মেরে বসে থাকে। যদিও রোগীর কোন ক্ষতি করে না, তবে তার পায়খানার সাথে অল্প অল্প করে বাইরে বের হতে থাকে। অর্থাৎ রোগী অন্যদের জন্য chronic carrier হিসেবে কাজ করে। এক্ষেত্রে রেজিস্ট্যান্স না থাকলে ১ মাসের জন্য ciprofloxacin দিলে ভাল ফল পাওয়া যায়, বা যেসব এন্টিবায়োটিক bile এ বেশি secretion হয় যেমন cefoperazone দিলে GB salmonella মারা যেতে পারে। এতেও কাজ না হলে cholecystectomy করতে হয়!


🌿 Prevention is better than Cure, এই নীতিতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে, ভালভাবে হাত ধুতে হবে, স্যানিটারি ল্যাট্রিন ব্যবহার করতে হবে, খাবার ঠিকভাবে রান্না করতে হবে, বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে, তবেই অনেক ভাল থাকা যাবে।
পাশাপাশি এর কিছু vaccine ও আছে যা ২ বছরের পর থেকে দেওয়া যায়। polio, influenza এর মত typhoid এর vaccine ও দু ধরণের - live & killed. একবার নিলে ২-৩ বছরের জন্য ভাল থাকা যায়। অনেক দেশেই টাইফয়েড নির্মূল হয়েছে, তারা আমাদের মত টাইফয়েড প্রবণ দেশে আসার আগে শরীরে vaccine দিয়ে আসে। আশা করছি ঠিকঠাক হাইজিন মেইন্টেইন করতে সক্ষম হলে একদিন আমরাও enteric fever মুক্ত হব! ধন্যবাদ 🙂

Blog Writer : Dr. Kawsar (DMC)

বুধবার, ৮ এপ্রিল, ২০২০

একটুখানি লেখাপড়া - Headache (Dr. Kawsar)

একটুখানি লেখাপড়া 😀

Headache🤕

আউটডোরে রোগী দেখছি। পাতলা টিঙটিঙে এক লোক হঠাৎ রুমে ঢুকলো। কি সমস্যা জিজ্ঞেস করতেই সে তার হাতদুটো দিয়ে আমার মাথাটা এমনভাবে দলাই মলাই শুরু করলো যে আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। ব্যাটা বোধহয় নাপিত, যেভাবে মাসাজ করে ব্যাথার কথা বললো তাতে আমার তাই'ই মনে হলো! আমি আর মানা করলাম না, ভালই লাগছিলো, একটু ঘুম ঘুমও পাচ্ছিলো! 😴

মাথা ব্যাথায় ভোগেনি এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে। বিশেষ করে যারা মেডিকেলে পড়ে। আমার নিজেরই এক গল্প বলি। মেডিকেল ফার্স্ট ইয়ারে তখন। কেমন সব কঠিন কঠিন পড়া, কত কিছু মুখস্থ করতে হয়, আর মুখস্থ করাটাই ছিল আমার জন্য সবচেয়ে কঠিন কাজ। বুঝতে গেলে সময় লাগতো বেশি, পড়া আগাতো না। সব মিলিয়ে আমার জীবনে প্রথমবারের মত মাথাব্যাথা শুরু হলো। তখন আমাদের প্রিন্সিপাল বিখ্যাত নিউরোলোজিস্ট প্রফেসর কাজী দীন মোহাম্মদ স্যার। তো একদিন যেয়ে হাজির হলাম কলেজে স্যারের রুমে। স্যার সব শুনে বললেন, রিলাক্স থাকতে হবে, টেনশন করা যাবে না, মাঠে খেলাধূলা করতে হবে, আর অল্প কিছু ওষুধ দিলেন। ডায়াগনোসিস ছিল টেনশন হেডেক। এখনো হয় মাঝে মাঝে, ওষুধ খেতে হয় প্রায়শই!

মাথাব্যাথা মূলত দু ধরণের, Primary (নির্দিষ্ট কোন কারণ নাই), Secondary (নির্দিষ্ট কারণ আছে)। অল্প করে primary headache গুলোই আজ পড়বো, যেগুলো কমবেশি সবারই হয়, প্রচুর রোগী এ রোগের।

🍂 Tension type headache
সবচেয়ে কমন। পৃথিবীর সব মানুষই জীবনের কোন না কোন সময়ে এই মাথাব্যাথায় ভুগেছে। টেনশন ডিপ্রেশন এর অন্যতম কারণ, তবে এর প্রকৃত কারণ এখনো অজানা। এটি অনেক সময় migraine এর সাথে গোলমাল পাকায়, কারণ কাছাকাছি ক্লিনিক্যাল ফিচার। রোগী এসে বলে পুরো মাথায় চাপ দিয়ে ব্যাথা করে, টাইট ব্যান্ড দিয়ে পুরো মাথায় কেউ বেঁধে রেখেছে এমন। অনেক সময় মাথার দুপাশে (temporal) ব্যাথা হয়, মনে হয় রগদুটো লাফাচ্ছে। ব্যাথা তীব্রতার দিক থেকে dull, তবে কখনো খুব বেশি হতে পারে। যতই বেশি হোক তাতে বমি হয় না, বমি বমি ভাব থাকতে পারে। এই ব্যাথা পুরো মাথা জুড়েই হয়, migraine এ যেমন হয় মাথার একপাশে। এই ব্যাথার সময় আলো অসহ্য (photophobia) লাগে না, migraine এ যেমন লাগে। পুরো মাথায় হলেও ব্যাথার সূত্রপাত অনেক সময় মাথার পিছন (occiput) থেকে হয়। আর ব্যাথা কতক্ষণ থাকবে তার কোন ঠিকঠিকানা নাই, অল্প থেকে সারাদিনও হতে পারে। যেমন ব্যাথার শুরুর পর কোন খুশির খবরে ব্যাথা হঠাৎ কমে যেতে পারে। মাথায় উপর চাপ দিলে বা vertex এর চুল ধরে আস্তে টান দিলেও ব্যাথা (allodynia) বলতে পারে।

🍃 চিকিৎসাঃ যেহেতু এর অন্যতম কারণ টেনশন, সেহেতু টেনশন দূর করতে হবে। কাউন্সেলিং করতে হবে, এমন রোগী আসলে বলতে হবে, "আপনার রোগ ধরতে পেরেছি, চিন্তার কিছু নাই, যথাযথ চিকিৎসা দিচ্ছি, সুস্থ হয়ে যাবেন।" এতে তার স্ট্রেস কিছুটা কমবে। সাথে বলতে হবে, "এক্সারসাইজ করবেন, খেলাধুলা করবেন।" পাশাপাশি ওষুধ হিসেবে লো ডোজে Amitriptyline (TCA) দেওয়া যায় যা ডিপ্রেশন টেনশন কমাবে।

🍂  Migraine
অল্প বয়সে এটা বেশি হয়। মেডিকেল লাইফে আমার কিছু বন্ধুকে দেখেছি যাদের মাইগ্রেইন আছে। এটা বেশ কষ্টকর। অল্প বয়সে বেশি হয়, ছেলে অপেক্ষা মেয়েদের বেশি হয়, মেয়েদের মাসিকের সময় বেশি হয় যার কারণ হতে পারে তাদের হরমোনজনিত প্রভাব, তাই পিল (oestrogen only) খেলে এটা বাড়তে পারে, দেখা যায় পরিবারের অন্য কারো ছিল বা আছে যেমন মা-খালা। Tension headache এর মত এর কারণও অনেকটাই অজানা, তবে অতিরিক্ত স্ট্রেস এটা বাড়ে। অনেকের মতে এটা হয় কর্টিকাল নিউরনের ion channels এর গন্ডগোল ফলে, ফলে উল্টা পাল্টা ডিপোলারাইজেশন ও রিপোলারাইজেশন হয়, এতে হাইপোথ্যালামাস এবনর্মাল আচরণ শুরু করে, extracrania vasodilatation করে, শুরু হয় মাথাব্যাথা। আর এই ব্যাথা হয় মাথার একপাশে, অন্যদিকে Tension headache পুরো মাথায় হয়৷ ব্যাথার তীব্রতা এতই বেশি যে বমি হয়, Tension headache এ কিন্তু বমি হয় না। আলো অসহ্য লাগে, Tension headache এ আলো অসহ্য লাগে না। আলো অসহ্য লাগার পাশাপাশি অনেকে চোখে তাঁরা আর জিগজ্যাগ লাইন দেখা শুরু করে (২০%), যাকে বলে Aura এবং এটাকে classical migraine ও বলে। অনেকের (৮০%) এই  Aura থাকে না, তখন তাকে বলে common migraine. Aura'র তীব্রতা কখনো এত বেশি হয় যে সাময়িক সময়ের জন্য ন্ধও হয়ে যেতে পারে (scotoma)! যেহেতু আলো সহ্য করতে পারে না, তাই ব্যাথার সময় রোগী অন্ধকার ঘরে চুপচাপ শুয়ে থাকে কারণ নড়াচড়া করলেও ব্যাথা বাড়ে!

🍃 চিকিৎসাঃ যখন মাথাব্যাথা শুরু হয়, তখন চিকিৎসা হিসেবে Paracetamol, Aspirin, NSAID (Diclofenac) দেওয়া যায়। এতেও কাজ না হলে Triptans যেমন Sumatriptan, Zolmitriptan দেওয়া যায়। তবে একটু সতর্ক থাকতে হবে৷ এসব ওষুধ dependency তৈরি করে, করতে পারে medication overuse headache. বমি বন্ধ করার জন্য Domperidone দেওয়া হয়। যদি এ ম্যাথাব্যাথা মাঝেমধ্যেই হয়, যেমন প্রতিমাসে দু'বারের বেশি তখন prophylaxis দেওয়া হয়। এই prophylaxis এ বিভিন্ন প্রকার ওষুধ একসাথে থাকে, যেমন- Propanolol (beta blockers), amitriptyline (antidepressant), sodium valproate (antiepileptic)। রোগী নিয়মমাফিক ৩ থেকে ৬ মাস এগুলো খেলে অনেক ভাল থাকে।

🍂 Cluster headache (migranious neuralgia)
migraine এর সাথে এর তফাত হল, ওটা যেমন অল্প বয়সে বেশি হয়, এটা হয় একটু বয়সে বাড়লে, যেমন ৩০ বছর বয়সে। migraine যেমন মেয়েদের বেশি হয়, এটা হয় ছেলেদের বেশি। অন্য গুলোর মত এরও তেমন নির্দিষ্ট কোন কারণ জানা যায়নি। তবে PET CT করে দেখা গেছে উপরের ওই migraine এর মত এখানেও hypothalamus কিছুটা এবনর্মাল আচরণ করে। টেনশন করলে যেমন tension headache বেশি হয়, তেমনি ধূমপান আর ড্রিংক করলে cluster headache বেশি হয়। এই ব্যাথা দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে হবে, আজ যখন হবে - কাল ঠিক একই সময়ে হবে, আর তাই একে cluster বলে। এখন ধরুন ব্যাথা রাত ২ টায় শুরু হয়, পরদিন রাত ২ টায় সে ঘুমিয়ে আছে, ঠিকই একই সময় ব্যথা শুরু হবে এবং ঘুম ভেঙে যাবে, তাই একে alarm clock headache ও বলে! tension headache হয় পুরো মাথায়, migraine হয় মাথার একপাশে, আর এই cluster headache হয় যে কোন একটা চোখ ও চোখের চারপাশে, তবে বাম চোখে বেশি। চোখে ব্যাথা এত বেশি হয় যে চোখ লাল হয়ে যায়, চোখ দিয়ে পানি পড়ে, নাক বন্ধ হয়ে যায় (nasal congestion), অনেকটা allergic rhinitis এর মত।

🍃 চিকিৎসাঃ এর জন্য আলাদা তেমন কোন চিকিৎসা নাই। চিকিৎসা অনেকটা migraine এর মতই। মাথা ব্যাথা শুরু হলে subcutaneous injection হিসেবে Sumatriptan দেওয়া হয়, সাথে 100% অক্সিজেন থেরাপি। migraine এর prophylaxis গুলো এখানেও prophylaxis হিসেবে দেওয়া যায়, তবে অতটা কার্যকারী না, পাশাপাশি দেওয়া হয় Verapamil (Rate limiting CCB), অল্প কিছুদিনের জন্য oral glucocirticoid ও lithium therapy.

🍂 Trigeminal neuralgia
নাম শুনেই বুঝা যায়, সমস্যা ৫ নাম্বার cranial nerve Trigeminal এ। এর তিনটি (Tri) branch আছে, সমস্যা হয় ২য় (maxillary) ও ৩য় (mandibular) branch এ। Migraine হয় অল্প বয়সে, Cluster headache হয় ৩০ এ, আর Trigeminal neuralgia হয় ৫০ এর পর। কারণ হিসেবে যা এই nerve টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, যেমন বয়সজনিত demyelination, হতে পারে multiple sclerosis, বা অন্য কোন lession যা nerve টাকে চাপ দিয়ে ধরে। এই ব্যাথা খুব সামান্য সময়ের জন্য হয়, হয়তো কয়েক সেকেন্ড। অল্প সময় ধরে হয় বলে এর তীব্রতাও বেশি৷ এত বেশি যে মনে হবে সুই দিয়ে কেউ মুখ ফুঁটো করে দিল! মুখের উপর হাত দিয়ে স্পর্শ করলে, ঠান্ডা বাতাস এসে মুখে লাগলে, বা খাওয়ার সময় যখন এই nerve উদ্দিপ্ত হয়, ঠিক তখনই ব্যাথা হতে পারে। এই ব্যাথাটা মাথা থেকে মুখেই বেশি হয় কারণ trigeminal nerver মুখেই সাপ্লাই দেয়। তবে অনেক সময় Trigeminal neuralgia ও Cluster headache একসাথে থাকতে পারে, তখন মুখে ও মাথায় একসাথে ব্যাথা হতে পারে!

🍃 চিকিৎসাঃ nerve এর sensitivity কমানোর জন্য carbamazepine দেওয়া হয়। যারা এই ওষুধ সহ্য করতে পারে না, তাদেরকে gabapentin, pregabalin, amitriptyline, glucocorticoid দেওয়া হয়, যারা nerve irritation কমায়। যদি কোন lession nerve টাকে চাপ দিয়ে ধরে রাখে, তবে সেটাকে surgical decompression করলেও এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

🍂 Medication overuse headache
মাথাব্যাথার জন্য ওষুধ খাচ্ছে, খেতে খেতে বেশি দিন খেয়ে ফেললো। আর এখন সেই ওষুধের জন্যই উল্টো আরো বেশি মাথাব্যাথা হচ্ছে। সবার হয় না, কিছু কিছু মানুষের হয়।

🍃 চিকিৎসাঃ এমনটা দেখা দিলে চিকিৎসা হল আস্তে আস্তে মাথাব্যাথার ওই ওষুধটা বন্ধ করে দেওয়া। এতে প্রথম প্রথম ব্যাথা আরো বাড়বে, পরে আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে, রোগীকে কাউন্সেলিং করতে হয়।

🍂  Headache due to specific activities
ছেলেদের বেশি হয়, ৩০/৪০ বছর বয়সের দিকে। কোন একটা ভারী কাজ করলো, ঠিক তারপরই হঠাৎ মাথাব্যাথা শুরু হলো। শুধুই মাথাব্যাথাই আর কোন সিম্পটম নাই, tension headache এর মত পুরো মাথায়ই হতে পারে। বেশিক্ষণ থাকে না, বড়জোর ১০-১৫ মিনিট। এ ব্যাথারও কোন কারণ নাই।

🍃 চিকিৎসাঃ এই বয়সে মাথাব্যাথা মানেই stroke বা subarachnoid haemorrhage এর ভয়। ভয় দূর করতে ও কনফার্ম হতে CT scan, CSF study করা হয়৷ যদি দেখা যায় কিছু নাই, তাহলে নিশ্চিত। ব্যাথার সময় সাধারণ paracetamol দেওয়া হয়, আর যদি মাঝেমাঝেই হয় তবে prophylaxis হিসেবে indomethacin বা propanolol ব্যবহার করা হয়।

সব ম্যাথাব্যাথা নিপাত যাক,
কষ্ট থেকে সবাই মুক্তি পাক। 😇

Caurtesy : Kawsar Uddin

একটুখানি লেখাপড়া - Hypertension (Dr. Kawsar)

একটুখানি লেখাপড়া 😃

Hypertension

সবাইকে ফাল্গুনী শুভেচ্ছা, বসন্ত সুন্দর হোক 🌷🌺💐
টেনশনে টেনশনে পালপিটেশন! হাইপারটেনশন নিয়ে কারোরই টেনশনের শেষ নাই! খুকি থেকে গুড়ো, জুয়োন থেকে বুড়ো, হাসপাতালে যেই আসুক না কেনো, বিপি মেশিন দেখলেই তাদের হৃদয় নিশপিশ করিয়া ওঠে, আর মনে মনে ভাবিতে থাকে, 'ইশ প্রেশারটা যদি একটু মাপিয়া লওয়া যাইত!' আমিও তাহাদেরকে নিরাশ না করিয়া, সর্বাগ্রে প্রেশার মাপিয়া উষ্ণ হৃদয়কে শীতল করিয়া দিই!
সে যাই হোক, সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে প্রেশারেরও অগ্রগতি হচ্ছে। বর্তমানে ৬০ বছরের উপর অর্ধেক লোকেরই হাইপারটেনশন। জীবনধারণ ও খাদ্যাভাসের পরিবর্তন এর প্রধাণ কারণ। যদিও 95% হাইপারটেনশনের কোন কারণ জানা যায় না, যাকে বলে Essential Hypertension। আর 5% হল Secondary Hypertension অর্থাৎ অন্য কোন রোগের বাই প্রোডাক্ট। Essential বা Secondary যেটাই হোক, দুটোই কিছু risk factors দ্বারা প্রভাবিত -
1. Smoking
2. Hyperlipidaemia
3. High salt intake
4. Obesity
5. Sedentary lifestyle
6. Alcoholism
এই ফ্যাক্টরগুলো চাইলেই চেঞ্জ করা সম্ভব অর্থাৎ modifiable risk factors; রোগীর এ ধরণের ফ্যাক্টর থাকলে জোর গলায় বলতে হবে, 'সময় থাকতে ভাল হও, নইলে কিন্তু খবর আছে!' আর হ্যা, ভুলেও বলবেন না কাঁচা লবণ খাবেন না! তাহলেই প্রশ্ন আসবে, 'স্যর, লবণ কি ভাইজ্জা খামু?' তাই বলা ভাল, 'ভাতের সাথে আলাদা করে লবণ না, তরকারীতেও যতটা কম। তেল চর্বি কম, শাকসবজি বেশি। ওজন নিয়ন্ত্রণ, করেন হাটাহাটি।'
রোগীদের রোগ সম্পর্কে বলে সতর্ক করতে হবে। যেমন বলতে হবে, হাইপ্রেশার নিয়ন্ত্রণে না থাকলে মারাত্মক রোগের ঝুঁকি বাড়ে। প্রেশারে পিষ্ট হয়ে নিচের সমস্যাগুলো হতে পারে..
1. Heart attack, Heart failure, Arrhythmia
2. Stroke, SAH
4. Renal failure
5. Retinopathy, Blindness
6. Vascular damage - aortic aneurysm - aortic dissection
পাশাপাশি কিছু factors, যেগুলো Essential hypertension develop করার জন্য অনেকাংশে দায়ী, lifestyle চেঞ্জ করেও যে ফ্যাক্টরগুলো চেঞ্জ করা সম্ভব না -
1. Increased peripheral resistance, increased vessel tone
2. Increased autonomic tone
3. Endothelial dysfunction
4. Neurohumoral factors
5. Certain genetic factors
এই ফ্যাক্টরগুলোর অধিকাংশই বয়সের সাথে বাড়ে, তাই গুড়োদের চেয়ে বুড়োদেরই hypertension বেশি!
Essential বা Secondary যাই হোক না কেনো, Hypertension ডায়াগনোসিস করে দ্রুত ট্রিটমেন্ট শুরু করতে হবে, কারণ এটি দ্রুত organ damage করে। প্রথম ট্রিটমেন্ট - Lifestyle modification, উপরে যা বলেছি (modifiable risk factors)। পাশাপাশি থাকবে প্রেশার কমানোর ওষুধ। আর
সাথে থাকবে অন্য যেসব secondary কারণে প্রেশার বাড়ে সেগুলোর ঠিকঠাক ডায়াগনোসিস ও চিকিৎসা। যেমন-
> DM থাকলে সেটা কন্ট্রোল করা
> Cholesterol বেশি থাকলে Lipid lowering agent ব্যবহার
> রক্ত পাতলা রাখার জন্য Aspirin
> Renal disease যেমন- glomerulonephritis, renal vascular stenosis, PKD, PAN থাকলে তার চিকিৎসা
> Coarctation of aorta আছে কিনা (radio femoral delay দেখতে হবে)
> Endocrine disease, যেমন- pheochromocytoma, acromegaly, cushing & conn syndrome, hypo or hyperthyroidism, hyperparathyroidism, Liddles syndrome থাকলে সেগুলোর চিকিৎসা
> প্রেশার বাড়ায় এমন কোন ওষুধ খায় কিনা? যেমন OCP, Steroid, NSAID পেইনকিলার। যদি খায় তবে তার ডোজ কমানো বা বন্ধ করা।
তাই কারো hypertension ডায়াগনোসিস করে শুধু প্রেশার কমানোর ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দিলেই হবে না, পাশাপাশি উপরে বলা রোগব্যাধির কিছু আছে কিনা একটু যাচাই করে দেখতে হবে। তেমন কিছু না পেলে Essential hypertension ধরে ট্রিটমেন্ট শুরু করতে হবে। যদি কমে তো ভাল, না কমলে বুঝতে হবে ওষুধ ঠিকমত খায় না, ওষুধ কাজ করে না (ভুয়া কোম্পানি), লাইফস্টাইল চেঞ্জ করে নাই। সবকিছু ঠিকঠাক, তারপরেও কমে না, তাহলে ধরে নিতে হবে secondary cause গুলো ঠিকমত evaluate করা হয়নি!
>> এবার আসি ডায়াগনোসিস এ
Symptoms তেমন কিছুই নাই, অনেকে discomfort ফিল করে, কারো ঘাড় বা মাথা ব্যথা করতে পারে, তবে এগুলো non specific. একমাত্র specific হল BP মাপা-
Normal : SBP < 120 & DBP < 80
Elevated BP : SBP 120 - 129 & DBP < 80
এবার শুরু Hypertension-
Stage 1 : SBP 130 - 139 or DBP 80 -89
Stage 2 : SBP >= 140 or DBP >= 90
Hpertensive crisis : SBP >= 180 or DBP >= 120
(হিসেবগুলো mmHg তে, AHA guidelines)
প্রেশার Normal থাকলেও সকল প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষ প্রতি ৫ বছর পর পর রুটিন চেকআপ হিসেবে প্রেশার মাপাবে।
প্রেশার Eleveted থাকলে প্রতি ৩ মাস পরপর মাপাবে, নিয়মকানুন মেনে চলবে। Stage 1 এ ওই একই কথা, তবে risk factors থাকলে বা সাথে associated coronary events থাকলে ওষুধ শুরু করতে হবে।
প্রেশার বেড়ে গিয়ে যদি বেশি হাইপ্রেশারে চলে যায় (Stage 2), তাহলে নিয়মকানুনের পাশাপাশি ওষুধ দিতে হবে; সাথে প্রয়োজনমত অল্প কিছুদিন পরপর রেগুলার BP monitoring.
(কেউ কেউ বলেন, BP 160/100 বা তার বেশি হলেই ওষুধ শুরু করতে, আর coronary events থাকলে 140/90 বা তার বেশি।)
এবার গল্প শুনি! ডা. জুয়েল সাদা এপ্রন পরে চেম্বারে চুপচাপ বসে আসেন। সময় তখন সকাল ৯ টা হবে। হঠাৎ করেই হুড়মুড় করে দু'ব্যক্তির রুমে প্রবেশ, দুজনের চেহারাতেও বেশ মিল। ডা. জুয়েল তাদেরকে বসতে বললেন, তারপর নাম জিজ্ঞেস করলেন। উত্তরে তারা জানালো, তারা দুই ভাই, ছোটজনের নাম মি. নাহিদ আর বড়জন মি. জাহিদ; একজনের বয়স ৫০, অন্যজনের ৬০। কি সমস্যার জন্য এসেছেন জিজ্ঞেস করতেই তারা উত্তর দিল, 'প্রেশার মাপতে আইছি!' ডাক্তার সাহেব আড়চোখে খেয়াল করলেন - দুজনেই হালকা ঘেমে গেছেন, অল্প একটু হাপাচ্ছেনও বটে। বুঝলেন তারা বেশ তাড়াহুড়ো করে এখানে এসেছেন, তিনি তাই তাদের একটু জিরিয়ে নিতে বললেন, আর মি. জাহিদকে বললেন তার গায়ে আটোসাটো ফুল হাতার সোয়েটারটা খুলে ফেলতে। কিছুক্ষণ পর তিনি ড্রয়ার থেকে BP মেশিনটা বের করে প্রথমে মি. নাহিদ ও পরে মি. জাহিদের BP টা চেক করলেন। দুটোই বেশি আছে, কিন্তু তাদের কিছু বললেন না। এরপর ডা. জুয়েল দুটো প্রেসক্রিপশন এ রোগীদের নাম বয়স লিখে হিস্ট্রি নিলেন ও কিছু ফিজিক্যাল এক্সামিনেশন করলেন। ophthalmoscope দিয়ে চোখটাও পরীক্ষা করলেন (hypertensive retinopathy আছে কিনা)। তারপর তিনি হাসি দিয়ে বললেন, 'আপনারা তো খুবই ভাল আছেন, তেমন কোন সমস্যাই নেই।' এই কথা শুনে মি. নাহিদ ও মি. জাহিদ দুজনের মুখেই হাসি। এটা বলে ডা. জুয়েল আবার তাদের BP মাপা শুরু করলেন। এবারও দুজনের BP বেশি পেলেন। তারপর, বড়ভাই মি. জাহিদকে বললেন বসা থেকে উঠে দাঁড়াতে, দাঁড়ানো অবস্থায় তার BP আবার মাপলেন (Postural Hypotension আছে কিনা দেখার জন্য, বসা থেকে দাঁড়ালে প্রেশার কমে যায়, adult ও diabetic patient দের থাকতে পারে)
দু'বার BP মেপে তিনি দুজনেরই Stage 2 Hypertension ডায়াগনোসিস করে ট্রিটমেন্ট লেখা শুরু করলেন, পাশাপাশি বললেন, 'প্রেশার একটু বেশি, তবে চিন্তার কিছু নাই, এই ওষুধ নিয়মিত খাবেন, নিয়মকানুন মেনে চলবেন, তাহলেই অনেক সুস্থ থাকবেন।' সাথে দিলেন কিছু রুটিন টেস্ট-
1. Urine R/E
2. S. electrolyte, S. creatinine, Blood urea
3. FBS, 2HAB
4. Fasting lipid profile
5. Thyroid function test
6. ECG
প্রয়োজন অনুসারে প্রতি ৩ মাস পর রোগীর অবস্থার উপর নির্ভর করে কিছু টেস্ট রিপিট করা লাগতে পারে।
Hypertension এর ট্রিটমেন্ট DM এর মতই Step-up, সাথে প্রয়োজনমত Add-on থেরাপি।
Antihypertensive ওষুধগুলোকে গুলোকে প্রাথমিকভাবে নিচেরমত ভাগ করতে পারি-
A- ACE inhibitors/ARB
C- Calcium channel blocker
D- Diuretics
B- Beta blockers/Alpha blockers
(আরো কিছু আছে direct vasodilator, যেমন Hydralazine, Minoxidil, Sodium nitropruside, etc.)
> Step 1: বয়স 55 yrs এর নিচে হলে A, আর উপরে হলে C দিয়ে শুরু করতে হবে।
> Step 2: না কমলে Add on, দুজনের জন্যই উপরের Step 1 এর কম্বিনেশন A+C
> Step 3: না কমলে Add on, দুজনের জন্যই A+C+D
> Step 4: না কমলে Add on, দুজনের জন্যই A+C+D+B
এবার তাহলে প্রেসক্রিপশন লেখা শুরু করি-
Step 1:
মি. নাহিদের জন্য (বয়স 55 এর কম)
Tab. Losartan 25 mg
0+0+1 -- চলবে
মি. জাহিদের জন্য (বয়স 55 এর বেশি)
Tab. Amlodipine 5 mg
0+0+1 -- চলবে
(ACE in ও
ARB এর মধ্যে ACE in বেশি effective; কিন্তু এটার side effects ও বেশি যেমন dry cough, hyperkalaemia, renal dysfunction করে; তাই শুরু করার ১-২ সপ্তাহ পরপর S. creatinine S. electrolyte মনিটরিং করতে হবে। তাই তুলনামূলকভাবে ARB ই বেশি ভাল, তবে দামটা একটু বেশি, তাই low cost ARB দিয়ে শুরু করাই ভাল যেমন Losartan. পাশাপাশি মনে রাখতে হবে ACE in ও ARB দুটোই First dose hypotension করে।)
Step 2:
৩ মাস পরেও BP কন্ট্রোলে না এলে,
মি. নাহিদের জন্য (বয়স 55 এর কম)
Tab. Losartan 50 mg
0+0+1 -- চলবে
মি. জাহিদের জন্য (বয়স 55 এর বেশি)
Tab. Amlodipine 10 mg
0+0+1 -- চলবে
শর্ত ১> এখানে একটা কিন্তু আছে! Amlodipine side effect গুলোর মধ্যে palpitation, flushing, ankle oedema কমন। oedema ছাড়া বাকি side effects দেখলে Amlodipine 5 কে 10 না করে Step 2 এর কম্বিনেশন শুরু করা ভাল, অর্থাৎ
মি. জাহিদের জন্য
Tab. Amlodipine 5 mg
1+0+0 -- চলবে
Tab. Losartan 25 mg
0+0+1 -- চলবে
শর্ত ২> কিন্তু যদি Step 1 এ Amlodipine ব্যবহারের জন্য মি. জাহিদের oedema ডেভেলপ করে তবে Amlodipine টোটালি বাদ দিয়ে D মানে Diuretics দিতে হবে, diuretics রোগীর oedema কমাবে-
মি. জাহিদের জন্য
Tab. Hydrochlorothiazide 25
1+0+0 -- চলবে
Step 3:
৩ মাস পরেও BP কন্ট্রোলে না এলে,
Add on কম্বিনেশন থেরাপি A+C.
মি. নাহিদ ও মি. জাহিদ উভয়ের জন্যই ,
Tab. Losartan 25/50 mg
0+0+1 -- চলবে
Tab. Amlodipine 5 mg
1+0+0 -- চলবে
এখানে আগের Lostartan 50 কে 50 ই রাখা যেতে পারে বা কমিয়ে 25 করা যেতে পারে, তবে Low dose কম্বিনেশন করাই ভাল।
Step 4:
৩ মাস পরেও BP কন্ট্রোলে না এলে,
Add on কম্বিনেশন থেরাপি A+C+D.
বাজারে A+D একসাথে plus হিসেবে পাওয়া যায়,
মি. নাহিদ ও মি. জাহিদ উভয়ের জন্যই,
Tab. Losartan plus 50/12.5 mg
1+0+0 -- চলবে
Tab. Amlodipine 5
0+0+1 -- চলবে
ARB এর সাথে Thiazide দিলে একটা synergistic effect তৈরি হয়। কিভাবে? thiazide diuretics renal blood flow কমিয়ে renin angiotensin system এর activity বাড়ায়, অন্যদিকে ACE in / ARB renin angiotensin system কে inhibit করে। দুটো মিলে সমান সমান!
Step 5:
৩ মাস পরেও BP কন্ট্রোলে না এলে,
কম্বিনেশন এর ডোজ বাড়িয়ে
Tab. Tab. Losartan plus 100/25 mg
1+0+0 -- চলবে
Tab. Amlodipine 5
0+0+1 -- চলবে
৩ মাস পরেও কন্ট্রোলে না এলে, এটা আর তখন যেনতেন কোন Hypertension না, এটাকে এখন Resistant Hypertension
তাই এখন,
thiazide এর পাশাপাশি potassium sparing diuretic যেমন spironolactone add করতে পারি। Diuretic টলারেট না করতে পারলে beta বা alpha blocker add করা। Diuretics টলারেট করতে সমস্যা কোথায়? এর বেশ কিছু side effects আছে যেমন- সব electrolyte কমায় অর্থাৎ hypo করে except calcium অর্থাৎ hypercalcaemia করে (loop diuretics কিন্তু hypocalcaemia করে), পাশাপাশি আরো ৩ টা hyper করে যেমন- hyperglycaemia, hyperuricaemia, hyperlipidaemia.
তাই এর পরের Step এ আমরা beta blocker add করতে পারি। Cardioselective beta blocker যেমন Atenolol, Bisoprolol বা Metoprolol এড করা যেতে পারে যারা শুধুমাত্র Beta 1 receptor কে block করে, ফলে bronchoconstriction বা vasoconstriction হয় না। আবার Alpha blocker যেমন prazosin, doxazosin ও add করা যেতে পারে। আরো potent action এর জন্য both beta & alpha blocker যেমন Labetalol বা Carvedilol add করা যেতে পারে। আমরা এখানে Selective beta blocker add করলাম-
Step 6:
Tab. Losartan plus 100/25 mg
1+0+0 -- চলবে
Tab. Amlodipine 5 mg
0+0+1 -- চলবে
Tab. Bisoprolol 2.5 mg
1+0+0 -- চলবে
মাসখানেক পর পর Bisoprolol এর dose বাড়িয়ে 2.5 থেকে 5, 5 থেকে 10 করা যেতে পারে, এরপরেও BP না কমলে অন্য antihypertensive গুলো কমিয়ে double beta blocker দেওয়া যেতে পারে। মনে রাখা ভাল নিতান্ত প্রয়োজন না হলে ৩ টা বা ৪ টা antihypertensive একসাথে না দেওয়াই ভাল, দিলে অবশ্যই কেয়ারফুল মনিটরিং।
Malignant Hypertension বা Hypertensive crisis অর্থাৎ SBP >= 180 or DBP >= 120 তে IV Labetalol বা IV GTN বা IV Sodium nitropruside বা IV Furosemide বা IM Hydralazine ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলো ব্যবহারকালীন সময়ে careful BP monitoring করতে হবে। malignant hypertension ম্যানেজমেন্ট খুব দ্রুত করতে হবে, তবে খুব দ্রুত প্রেশার কমানো যাবে না - কমাতে হবে আস্তে আস্তে, কারণ এই প্রেশারে retinal haemorrhage, haemorrhagic stroke, encephalopathy, heart failure, renal failure acutely ডেভেলপ করতে পারে, আর দ্রুত কমালে cerebral perfusion কমে যেতে পারে।
IV IM drug ছাড়া oral long acting CCB দিয়ে malignant hypertension ট্রিটমেন্ট করা যায়, তবে nifedipine কখনোই নাই, কারণ এটা হঠাৎ করে প্রেশার বেশি কমায়, ফলে হতে পারে ischaemic stroke.
Pregnancy তে antihypertensive হিসেবে Labetalol (100/200 mg, 1+0+1) বা alpha methyl dopa (250/500 mg, 1+0+1) সেইফ।
রোগীর প্রেশারের উপর নির্ভর করে আস্তে আস্তে ওষুধের ডোজ কমানো যায়, কমানো যায় কম্বিনেশনও। এমনকি Lifestyle পুরোপুরি নিয়মের মধ্যে থাকলে সবগুলো antihypertensive ই omit করা যায়! আর এ সবকিছু নির্ভর করছে রোগীর সার্বিক অবস্থা এবং মনিটরিং এর উপর। অনেক রোগীই মনে করে, শুরু করলে শেষ নাই, কথাটা যে ভুল রোগীদের তা বলতে হবে। কলম দিয়ে শুধু 'চলবে' লিখে দিলেই হবে না, মুখে বলতে হবে - প্রতিদিন নিয়মমত একই সময়ে খাবেন, বাদ দিবেন না, আর অবশ্যই বেঁধে দেওয়া সময়ে প্রেশার মনিটরিং করবেন।
>> কিছু বিশেষ শর্ত ***
Beta blocker সাধারণত first line drug হিসেবে ব্যবহার হয়না, কিন্তু নিচের কন্ডিশনগুলোয় antihypertensive হিসেবে beta blocker ই হল first line-
> রোগী Angina, MI নিয়ে আসছে, প্রথমেই Beta blocker শুরু করুন (MI হয়ে যদি acute heart failure ডেভেলপ করে আর beta blocker টলারেট না করতে পারে, তবে তার পরিবর্তে calcium channel blocker বা rate limiting calcium channel blocker যেমন Verapamil বা Diltoazem ব্যবহার করা যেতে পারে, Verapamil কিন্তু constipation করে)
> রোগী stable heart failure নিয়ে আসছে (acute heart failure এ দেওয়া যাবে না, কারণ cardiac output আরো কমিয়ে দেবে, সেক্ষেত্রে diuretics বা ACE in/ARB ব্যবহার করুন)
উপরের condition গুলোতে First line Beta blocker এর সাথে 2nd যদি কিছু add করতে হয় তবে সেটা calcium channel blocker, তবে কখনোই Thiazide diuretics না কারণ দুটোই hyperglycaemia করে, বাড়ে DM এর ঝুঁকি।
>> কিছু লক্ষ্যনীয় বিষয়, Hypertension এর সাথে-
> রোগীর DM আছে, বয়স ৫৫ এর কম বা বেশি যাই হোক না ACE in/ ARB দিয়ে শুরু করুন। T1DM হলে ACE in, T2DM হলে ARB. এতে কন্ট্রোল না হলে উপরের মত কম্বিনেশন।
> শুধুমাত্র SBP বেশি অর্থাৎ isolated systolic hypertension, তা সে যে বয়সেই হোক না কেন, এক্ষেত্রে calcium channel blocker বা diuretics প্রথমে শুরু করুন।
> Benign prostatic hypertrophy আছে, তাহলে Alpha blocker শুরু করুন। এক ঢিলে দুই পাখি! প্রেশারও কমবে প্রোস্টেট ও সাইজে ছোট হবে!
> Heart block থাকলে, কোন Beta blocker বা Calcium channel blocker কখনোই না, বরং বাকিগুলো দিয়ে ট্রাই করুন।
> Uric acid বেশি, Gout আছে! তাহলে thiazide বাদ, কারণ এটি hyperuricaemia করে। যদি একান্ত দিতেই হয়, সাথে অবশ্যই Allopurinol দিবেন, পাশাপাশি regular monitoring of S. uric acid.
> DM এ chronic nephropathy ডেভেলপ করে proteinuria হয়, এক্ষেত্রে ACE in / ARB দিলে proteinuria কমে। কিন্তু acute renal disease বা renal artery stenosis এ এগুলো দেওয়া যাবে না, কারণ এরা afferent arteriole dilate করে glomerular filtration কমিয়ে renal failure করতে পারে।
> Beta blocker বা Thiazide লং টার্ম খেলে impotency ডেভেলপ করতে পারে।


একটুখানির আশা দিয়ে অনেকখানি আজ পড়িয়ে দিলাম। লিখতে লিখতে এ অধম ক্লান্ত, আজ তাই এখানেই দিলাম ক্ষান্ত। এ বিষয়ে আমার জানার পরিধি অন্য অনেকের তুলনায় অতি নগণ্য, যতটুকু জানি ততটুকুই নিজের মত লেখার চেষ্টা করছি শুধু। তাই অনিচ্ছাকৃত ভুলত্রুটি থাকতেই পারে, দৃষ্টিগোচর করার অনুরোধ করছি। ধন্যবাদ সবাইকে :-)

KAWSAR UDDIN
DMC-K 65

Ref: Davidson, Oxford medicine, MRCP exam books, AHA guidelines, Katzung, etc.
KK65

একটুখানি লেখাপড়া - Diabetes (Dr.Kawsar)


একটুখানি লেখাপড়া 😃

লেকচারঃ Diabetes


'কুল' বংশের রাজা 'বকুল' হঠাৎ করিয়া খেয়াল করিলেন গভীর নিশিতে প্রকৃতি তাকে প্রায়শই ডাকিয়া চলে। সেই ডাকে সাড়া দিতে তাহাকে ঘুম ভাঙিয়া বারংবার যাইতে হয় জংগলে! ভাগ্যিস ডাকটা ছোট ছিল, বড় হইলে কবিরাজের যে বারোটা বাজিত!! তো পরেরদিন কবিরাজের ডাক পরিলো। তিনি চিকিৎসা বিদ্যার পোঁটলাপুটলি নিয়ে সোজা আসিয়া দরবারে হাজির। আজকালের মত সেকালে তো আর এত ল্যাবট্যাব ছিলো না, পঞ্চইন্দ্রিয়ই ছিল একমাত্র ভরসা। রাজামশাই অন্দর হইতে বোতল ভর্তি বিসর্জিত মূত্র নিয়া আগমন করিলেন। তাহা হইতে একটুখানি মুখে চাখিয়া কবিরাজ ইউরেকা ইউরেকা, স্যরি 'মধু মধু' বলিয়া চিৎকার দিয়া উঠিলেন। ইহাই হল 'মধুমেহ' বা 'honeyed urine' যা হল Diabetes Mellitus রোগীর মূত্র! আজ আমরা একটু একটু করে এই ডিম (DM) ই পারবো (পড়বো)! 😂😂😂
Diabetes Mellitus: রক্তে গ্লুকোজ স্বাভাবিক থেকে বেড়ে গিয়ে অনেকদিন থাকা, অর্থাৎ persistent hyperglycaemia.
তাই কোন একদিন নিয়মমাফিক টেস্ট করে রেজাল্ট বেশি পেয়েই ডায়বেটিস বলা যাবে না, এটা persistent কিনা দেখার জন্য পরে আবার রিটেস্ট করে দেখতে হবে। পাশাপাশি দেখতে হবে রক্তের গ্লুকোজ বাড়ায় এমন কোন ওষুধ সে খাচ্ছে কিনা, বা অন্য কোন রোগ আছে কিনা। চারটি হরমোন যারা রক্তের গ্লুকোজ বাড়ায়-
1. Glucagon
2. Growth hormone
3. Glucocorticoid (steroid জাতীয় কোন ওষুধ খায় কিনা জিজ্ঞেস করতে হবে)
4. Adrenaline
>> ডায়বেটিস ডায়াগনোসিস?
চারটি মেথডে করতে পারি-
মেথড ১:
যে কোন সময় যে কোন পেটে
RBS: >= 11.1 mmol/L
সাথে ডায়াবেটিস এর টিপিক্যাল সিম্পটমস (এই symptoms গুলো Type 1 এ আগেভাগে পাওয়া যায়, Type 2 তে একটু পর)
৩ টা poly-
1. polyuria (ঘন ঘন প্রসাব, প্রসাব: পানি+গ্লুকোজ)
2. polydipsia (পানির চাহিদা পূরণে ঘন ঘন পানি পিপাসা)
3. polyphagia (গ্লুকোজের চাহিদা পূরণে ঘনঘন ক্ষুধা লাগা)
সাথে Generalized weakness 😴
মেথড ২:
খালি পেটে
FBS: >= 7.0 mmol/L
কিছু শর্ত
টেস্টের পূর্বে কমপক্ষে ৮ ঘন্টা না খেয়ে থাকবে। তার আগের ৩ দিন স্বাভাবিক খাবার খাবে, পোলাও মিষ্টি জর্দা সেমাই, যা খুশি তাই, কোন বাঁধা নিষেধ নাই 😋। টেস্ট করতে হাসপাতালে যেয়ে সাথে সাথেই রক্ত না দিয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে দিলে ভাল হয়।
মেথড ৩:
সকালে খাওয়ার ২ ঘন্টা পর
2HAB >= 11.1 mmol/L
এটা OGTT (oral glucose tolerance test) এর মাধ্যমে করা হয়।
খালি পেটে রক্ত দিয়ে, ১ গ্লাস (২৫০ মিলি) পানিতে ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ গুলে খাবে। তার ঠিক ২ ঘন্টা পর রক্ত দিবে। এই ২ ঘন্টা কি করবে, ফুটবল খেলবে? নো খেলাখেলি, নো খাওয়া দাওয়া, চুপচাপ চেয়ারে বসে রেস্ট নিবে 😮।
মেথড ৪:
প্লাজমার গ্লুকোজ RBC তে প্রবেশ করে Hb এর সাথে যুক্ত হয়, তৈরি হয় HbA1c
প্লাজমাতে গ্লুকোজের চাপ যত বাড়ে, Hb এর সাথে যুক্ত হওয়ার পরিমাণও তত বাড়ে।
HbA1c >= 6.5%
এই টেস্ট যেনতেনভাবে করলে হবে না। নির্ভরযোগ্য ল্যাব থেকে উন্নত মেশিনে করলে তবেই ভাল রেজাল্ট পাওয়া যাবে।
উপরের ৪ টি মেথড এর মধ্যে সবচেয়ে ভাল হল খালি ও খাওয়ার ২ ঘন্টা পরের টেস্ট, অর্থাৎ OGTT. তাই অন্য দুই মেথডে রোগীর ডায়বেটিস ডায়াগনোসিস হলেও OGTT করে শিউর হওয়াটাই বেস্ট।
রক্তে স্বাভাবিক গ্লুকোজের মাত্রা-
খালি পেটে < 6.1 mmol/L
খাওয়ার ২ ঘন্টা পর < 7.8 mmol/L
ডায়বেটিস ডায়াগনোসিস হয়
খালি পেটে >= 7.0 mmol/L
খাওয়ার ২ ঘন্টা পর >= 11.1 mmol/L
এখন একটু যদি হিসেব নিকেশ করি তাহলে দেখবো এখানে একটা মধ্যবর্তী অবস্থা আছে, যেমন 6.1 থেকে < 7.0, এবং 7.8 থেকে < 11.1
এই মধ্যবর্তী অবস্থাকে বলে IGT (impaired glucose tolerance), এটাকে pre diabetes ও বলে। তাই এমনটা পেলে রোগীকে সতর্ক করে দিতে হবে, বলতে হবে, 'সময়ের এক ফোড়, অসময়ের দশ ফোড়! তাই নিয়মকানুন ঠিকঠাক মেনে চলুন, হুম 😡 !' কি নিয়ম মেনে চলবে?
1. Diet control 😶
2. Regular exercise 🤤
>> ডায়বেটিস কয় প্রকার?
সব মিলিয়ে ৪ প্রকার
1. Type 1 DM (শিশুদের বেশি হয়)
2. Type 2 DM (বড়দের বেশি হয়)
3. GDM (আগে নাই, গর্ভাবস্থায় হইছে; আগে ছিল, গর্ভাবস্থায় বাড়ছে)
4. Others (pancreas এর বিভিন্ন রোগব্যাধিতে হয়)
>> ম্যানেজমেন্ট?
যেটা বেশি পাই সেটা Type 2 DM, তাই সেটার ম্যানেজমেন্টই আগে পড়বো।
ডায়বেটিস ম্যানেজমেন্ট এর প্রথম শর্তই হল নিয়মকানুন মেনে চলা অর্থাৎ disciplined life. দুইটা জিনিস -
1. Diet control (ইহা অনেক বিশাল! এক কথায় শর্করা আর চর্বি কম, শাকসবজি বেশি)
2. Regular exercise (ইহাও বিশাল! শর্টকাট - প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট, সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন)
এখন আসি ওষুধে-
T2 DM এ যেহেতু insulin resistance থাকে, তাই insulin sensitivity বাড়ায় এমন ওষুধ দিয়ে প্রথমে শুরু করতে হবে। আর সেই সুপার ডুপার অন এন্ড অনলি স্মার্ট ড্রাগটা হল Metformin 😍
তবে একটা কিন্তু আছে! যদি creatinine level পুরুষের >= 1.5 mg/dl ও মহিলাদের >= 1.4 mg/dl থাকে তাহলে এটা দেয়া যাবে না, কারণ এটা kidney দিয়ে আউট হয়। এমনকি কাউকে এটা প্রেসক্রাইব করলে মাঝেমাঝে তার creatinine level চেক করে দেখতে হবে।
আর একটা বিষয়, T2 DM এর ট্রিটমেন্ট প্রথমে অনেকটা Step-up টাইপ এর। প্রতি ৩ মাস পরপর গ্লুকোজ লেভেল বা HbA1c চেক করে ওষুধের ডোজ বাড়াতে হবে। complications না থাকলে প্রথমেই কামান দাগানো যাবে না, আস্তে আস্তে ধৈর্য্য নিয়ে ম্যানেজমেন্ট শুরু করতে হবে। তাহলে শুরু করি-
Step 1:
Tab. Metformin 500 mg
1+0+1 -- চলবে (খাওয়ার পর, কারণ এটা GI upset করে। GI যদি একটু বেশি upset হয় তবে সাথে প্রয়োজনমত anti-ulcerant দিতে পারেন)
Step 2:
কন্ট্রোলে না আসলে ৩ মাস পর
Tab. Metformin 850 mg
1+0+1-- চলবে (খাওয়ার পর)
Step 3:
কন্ট্রোলে না আসলে ৩ মাস পর
Tab. Metformin 850 mg
1+1+1 -- চলবে (খাওয়ার পর)
এর ৩ মাস পরেও যদি কন্ট্রোলে না আসে, তবুও Metformin আর বাড়ানো যাবে না! খেয়াল করে দেখুন, Step 3 তে 850mg 1+1+1 ছিল, অর্থাৎ 2550 mg, আর Metformin এর ম্যাক্সিমাম ডোজ 2500 mg.
এবার তাহলে এর সাথে নতুন কিছু Add করতে হবে।
Add করবো incretin mimetics (DPP 4 inhibitors)
এরা কারা?
> sitagliptin
> vildagliptin
> linagliptin
এগুলোই সাধারণত বেশি ব্যবহার করা হয়। এখানে মনে রাখা ভাল প্রথম দুটো urine এ বের হয়, শুধু linagliptin বের হয় faeces এ।
তাই impaired renal function এ প্রথম দুটো ব্যবহার না করে linagliptin 5 mg (1+0+0) ব্যবহার করাটাই ভাল।
এই incretin mimetics গুলো কিভাবে কাজ করে? তার আগে জানতে হবে, incretins কি? physio তে পড়েছিলাম GIP, GLP এদেরকে incretin বলে যারা insulin secretion বাড়ায় যখন stomach থেকে chyme আসে duodenum এ।
তাহলে এবার আমরা পরের Step এ যেতে পারি-
Step 4:
(Add on therapy)
আগে শুধু Metformin ছিলো, এখন তার সাথে Sita অথবা Vilda এড করবো। বাজারে কম্বিনেশন ওষুধ পাওয়া যায় ( 500/50 অথবা 1000/50)
Tab. Metformin+Sita/Vilda 1000/50mg
1+0+1 -- চলবে (খাওয়ার পর)
Tab. Metformin 500mg
0+1+0 -- চলবে (খাওয়ার পর)
(Metformin 500 আলাদা কেন দিলাম? ওই যে উপরে পড়ে আসছি ম্যাক্সিমাম 2.5 gm দেওয়া যাই। তাই এখানে 1000+1000+500= 2500 পূর্ণ করলাম)
এর ৩ মাস পরেও যদি কন্ট্রোলে না আসে, তবুও Sita বা Vilda আর বাড়ানো যাবে না। তাহলে করনীয় কি? আবার নতুন কিছু এড করতে হবে, এবং সেটা হল Secretagogues (Sulphonylureas)। তারা কারা-
Glimepiride
Gliclazide
Glipizide
এরা insulin secrete করতে সাহায্য করে। Low dose এ শুরু করে অল্প করে বাড়াতে হবে, কারণ এরা hypoglycaemia করে। ধরুন আমরা Glimepiride দিলাম।
Step 5:
(Add on therapy)
Tab. Metformin+Sita/Vilda 1000/50 mg
1+0+1 -- চলবে (খাওয়ার পর)
Tab. Metformin 500 mg
0+1+0 -- চলবে (খাওয়ার পর)
Tab. Glimeperide 1 mg
1 + 0 + 0 -- চলবে (খাওয়ার ৩০ মি. আগে, কারণ এটা hypoglycaemia করে। low dose দিয়ে শুরু করেছি, মাত্র 1 mg, পরের step গুলোতে প্রয়োজনমত আস্তে আস্তে বাড়াবো, ম্যাক্সিমাম 4 mg পর্যন্ত।)
Step 6:
কন্ট্রোলে না আসলে ৩ মাস পর
Tab. Metformin+Sita/Vilda 1000/50mg
1+0+1 -- চলবে (খাওয়ার পর)
Tab. Metformin 500mg
0+1+0 -- চলবে (খাওয়ার পর)
Tab. Glimeperide 2 mg
1 + 0 + 0 -- চলবে (খাওয়ার ৩০ মি. আগে)
Step 7:
কন্ট্রোলে না আসলে ৩ মাস পর
Tab. Metformin+Sita/Vilda 1000/50mg
1+0+1 -- চলবে (খাওয়ার পর)
Tab. Metformin 500mg
0+1+0 -- চলবে (খাওয়ার পর)
Tab. Glimeperide 3 mg
1 + 0 + 0 -- চলবে (খাওয়ার ৩০ মি. আগে)
Step 8:
কন্ট্রোলে না আসলে ৩ মাস পর
Tab. Metformin+Sita/Vilda 1000/50mg
1+0+1 -- চলবে (খাওয়ার পর)
Tab. Metformin 500mg
0+1+0 -- চলবে (খাওয়ার পর)
Tab. Glimeperide 4 mg
1 + 0 + 0 -- চলবে (খাওয়ার ৩০ মি. আগে)
এর ৩ মাস পরেও যদি কন্ট্রোলে না আসে তাহলে গানের সুরে সুরে পড়ুন!
অনেক সাধনা করেছো, কিন্তু ডায়বেটিস কন্ট্রোল হয়না,
ট্যাবলেট দিয়ে লাভ নাই আর, ইনসুলিন দেও ময়না!'
ডা. ময়না ওষুধ বাদ দিয়ে এবার ডাইরেক্ট একশনে যাবে। শুরু হবে insulin. এটাই শেষ, এটাই বেস্ট! 🤩
বাজারে বিভিন্ন ধরণের ইনসুলিন পাওয়া যায়, তার মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে Biphasic বা Premixed insulin ব্যবহার করা হয়। Biphasic, কারণ এখানে দুইটা ভিন্ন ধরণের insulin একত্রে মিশানো থাকে। একটা Short acting (regular), আর একটা Intermediate acting (isophane/lente)। মিশানোর ratio হতে পারে 30:70 অথবা 50:50। অনেক সময় এ দু রকমের insulin আলাদা আলাদা কিনে প্রয়োজনমত বিভিন্ন ratio তে মিশিয়ে রোগীকে এডভাইস করা যায়।
কেন দু রকমের insulin দরকার?
আমাদের শরীরে insulin দু'ভাবে secretion হয় - Basal ও Bolus
Basal - সারাদিন অল্প অল্প করে
Bolus - ৩ বেলা খাওয়ার পর হঠাৎ বেশি
insulin এর মিক্সিং তাই ওভাবেই করা হয়, যাতে সেটি উপরের Basal Bolus দুটো ব্যাপারই কাভার করে। আরো কিছু ব্যাপার স্যাপার আছে, সেগুলোতে আর যাচ্ছি না।
insulin এর ডোজ-
0.2 - 0.4 unit / kg body weight
ধরুন আমরা 0.2 unit থেকে শুরু করেছি। রোগীর ওজন 60 kg, তাহলে সারাদিনে প্রয়োজন হবে 12 unit ইনসুলিন। এই 12 unit কে দুভাগে ভাগ করে দিতে হবে। তিনভাগের দু'ভাগ সকালে, একভাগ রাতে। অর্থাৎ 12 unit এর 8 unit সকালে, 4 unit রাতে। এবং অবশ্যই খাওয়ার ৩০ মি. আগে, যেহেতু ইনসুলিন hypoglycaemia করে।
ইনসুলিন কিন্তু weight gain করে, তাই বেশি মোটাসোটা মানুষকে ইনসুলিন এর পরিবর্তে injectable incretin mimetics যেমন Exenatide, Liraglutide দেয়া যেতে পারে। কিন্তু দাম বেশি, আর সহজলভ্যও নয়!
Step 9:
Inj. Premixed insulin
8+0+4 -- চলবে (খাওয়ার ৩০ মি. আগে)
insulin যখন দিবেন, তার আগে রোগীকে বলবেন হাজার দু তিনেক টাকা দিয়ে একটা গ্লুকোমিটার কিনে নিতে। কারণ ইনসুলিন শুরুর পর প্রথম দিকে প্রতি ২-৩ দিন পরপর গ্লুকোজ মেপে দেখতে হয় কন্ট্রোল আসছে কিনা বা hypoglycaemia হচ্ছে কিনা, এবং সে অনুযায়ী 2 - 4 unit করে ইনসুলিন বেশি কম দিয়ে ডোজ এডজাস্ট করতে হয়। এই এডজাস্ট করার সময় মনে রাখতে হবে, সকালের ইনসুলিন রাতের গ্লুকোজ, আর রাতের ইনসুলিন সকালের গ্লুকোজ কন্ট্রোল করে।
>> 8+0+4 ডোজে ইনসুলিন শুরুর পর-
> একদিন সকালে দেখলেন BB (Before Breakfast): 7-10 mmol/L (থাকার কথা ছিল 6.1 - 7.0), তাহলে উপরে সূত্রমতে রাতে 2 unit insulin এক্সট্রা যোগ করে দিন, অর্থাৎ 8+0+6
> যদি BB : >10 mmol/L হয়, তাহলে রাতে 4 unit যোগ করুন, অর্থাৎ 8+0+8
> আর যদি BB: < 4.5 mmol/L (hypo হয়ে যাচ্ছে), 2 unit insulin কমান, অর্থাৎ 8+0+2
যদি উপরের ঘটনাটা BB মানে before breakfast না হয়ে - BD মানে before dinner হত, তবে কি করতেন?
খুব সহজ, উপরের ঘটনাটাই উল্টো ভাবে ভাবুন। উপরের নিয়মে রাতের পরিবর্তে শুধু সকালের ইনসুলিন বাড়ান, কমান। অর্থাৎ 8+0+4 হবে 10+0+4 বা 12+0+4, আর hypo হলে 6+0+4
আর যদি গ্লুকোজ BB BD দুটোই বাড়ে কমে, তবে ইনসুলিনও দুটোতে বাড়ান কমান, উপরের দুই সুত্র অনুযায়ী। 🙂
Step 10:
এটাও ইনসুলিন, তবে একটু অন্যরকম। কি রকম? আগে ছিল short ও intermediate acting একসাথে মিশানো, আর এখন হল rapid acting (Aspart, lispro) ও long acting (Glargine, Detemir) আলাদাভাবে।
এখানে rapid acting কাজ করবে blous হিসেবে। bolus insulin secretion যেমন ৩ বার হয়, তাই এই ইনসুলিন শরীরে ৩ বার নিতে হবে, ৩ বেলা খাওয়ার ৫-১০ মিনিট আগে।
আর long acting দিনে ১ বার সন্ধ্যায় দেওয়া হয়, সারাদিনে অল্প অল্প করে রিলিজ হয়ে basal হিসেবে কাজ করে।
আগের হিসেব মনে করুন, 60 kg ওজনের ব্যক্তিটির 12 unit insulin দরকার। 12 কে দু'ভাগ করে 6 unit হবে rapid acting, বাকি 6 unit হবে long acting.
rapid acting যেহেতু ৩ বার দেওয়া হয়, সেহেতু 6 unit কে ৩ ভাগে ভাগ করে দিন অর্থাৎ-
Inj. Rapid acting insulin
2+2+2 -- চলবে (খাওয়ার ৫-১০ মি. আগে)
Inj. Long acting insulin
0+0+6 -- চলবে (খাওয়ার আগে পরে সমস্যা নেই, কারণ এটা hypo করে না)
Step 9 অপেক্ষা Step 10 এর এই ইনসুলিন কম্বিনেশন বেশি ভাল। কিন্তু চার বার সুচ ফুঁটাতে হয়, আর দাম কিছুটা বেশি তাই এটা অত প্রচলিত না।
Type 1 DM, GDM ও Type 1 DM with complications এ উপরের Step 1 - 8 বাদ দিয়ে সরাসরি Step 9 অর্থাৎ ইনসুলিন দিয়ে শুরু করতে হবে। কারণ Type 1 এ autoimmune destruction of beta cells থাকে, অর্থাৎ ইনসুলিন তৈরির ফ্যাক্টরিই নষ্ট, শ্রমিক (ওষুধ) পাঠাইয়া লাভ নাই! আর GDM এ oral drug গুলো pregnancy safe না (যদিও কিছু গাইডলাইন Metformin কে safe বলে)। আর বাইরে থেকে ইনসুলিন পাঠালে pancreas ও কিছুটা বিশ্রাম পেয়ে নিজেকে একটু ঠিকঠাক করে নিতে পারে। 😌
ইদানীং আমার অনেক বাবা মাকে দেখছি ওষুধ খাওয়া বাদ দিয়ে কি সব লতাপাতা খায়। তাদেরকে বলছি, এই gynura procumbens গাছের পাতা টাতা খেয়ে লাভ নেই, কারণ এটা গ্লুকোজ কমায় না। উল্টো বরং হজম না হয়ে ডায়বেটিস এর সাথে ডায়রিয়াও হতে পারে। 😫
>> ডায়বেটিস এ অসুবিধা কি হয়?
কিছু acute ও কিছু chronic অসুবিধা হতে পারে।
acute অসুবিধা mainly-
1. HHS (Hyperglycaemic Hyperosmolar State) - Type 2 তে বেশি হয়
2. Diabetic Ketoacidosis - Type 1 এ বেশি হয়
chronic অসুবিধা mainly-
microvascular - ৩ টা pathy
1. Retinopathy (মাঝে মাঝেই চোখ পরীক্ষা) 😵
2. Nephropathy (creatinine, urinary albumin, albumin creatinine ratio, GFR করে দেখতে হবে)
3. Neuropathy (foot care, পায়ের অনুভূতি ঠিক আছে কিনা দেখতে হবে)
macrovascular -
1. Stroke
2. Heart attack
3. Gangrene
cholesterol বেশি কিনা টেস্ট করে দেখতে হবে, বেশি থাকলে অবশ্যই lipid lowering agent দিতে হবে, পাশাপাশি regular monitoring of BP
BP বেশি দেখলে ACE বা ARB দিয়ে শুরু করতে হবে কারণ এরা proteinuria কমায়।
ডায়বেটিস নিয়ে জানার শেষ নেই। সমুদ্রসম জ্ঞানে কিছুটা পা রেখেছি মাত্র। অল্পেস্বল্পে তাই আজ এতখানি। ধৈর্য্য নিয়ে যারা দীর্ঘ লেখাটি পড়েছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ। ভুলত্রুটি থাকতে পারে, সুপরামর্শ দিবেন। 🤗

"ডায়বেটিস নিপাত যাক,

সুস্থতা মুক্তি পাক"

কাউসার উদ্দিন ভাই
ঢামেক,কে-৬৫